বছর কুড়ি
------------------/ নিরঞ্জন রায়
কতো বছর আকাশে চাঁদের দেখা নেই, বলবে মেয়ে? বছর কুড়ি!
তা জানিনা। ওসব হিসেব রেখে আর কী হবে!
এবার তুমিই বলো কেমন আছ?
আমার আবার থাকা নাকি!
রোজ সকালে শুকনো নদীর বুক পেরিয়ে পথের রাজা
পথ ভুলে পথেই থাকা, খাদির ব্যাগে ধারে পাওয়া দুটো কাব্যকথা,
ছেঁড়া খাতার পাতা জুড়ে এলোমেলো দু একটা স্মৃতিকথা,
শুন্য পায়ের আবরণে পুরনো একজোড়া চটি জুতা,
বুক পকেটে কী শুনবে? একটা সস্তা কলম। পাশ পকেটে দু চারটে খুচরো পয়সা,
চোখের উপর শ্মশান প্রবাসী বাবার পাওয়া আদ্যিকালের মোটা ফ্রেমের সেই চশমা।
তোমার কথা বলবে মেয়ে? আসবে বলে বিদায় নিয়ে কুড়ি বছর!
আমার কথা শুনবে তুমি, সময় হবে?
গায়ের মেয়ে,
সকাল দুপুর ডুবসাঁতারে, আমবাগানে আম কুড়োতে,
ফুলবাগানে পরীর বেশে।
পাহাড় ছুঁতে কেনই গেলাম, পা ফসকে গভীর খাদে
ডানা ভাঙা বুনো হংসী স্বজনহারা তেপান্তরে,
মন হারিয়ে মনের খোঁজে ভাঙা ডানায় রাজমহলে।
ভালোই তো! গাঁয়ের মেয়ে রাজার বধূ?
রাজ অঙ্গুরি হাতে চরে,
বক্ষদেশে নীলমণি হার, কর্ণলতায় সোহাগ দোলে।
কী আর বলবো তোমায়? তবুও শোন---,
বকুল তলার সেই অনুরাগ আজও ভাসে, মনের কথা মনেই থাকে!
এতদিনের বুকের ব্যথা কোথায় গেল তোমায় দেখে,
তোমার ছেঁড়া খাতায় আমার কথা একটু লিখ সোহাগ ভরে।
----------------------------------