আমার মৃত্যুর পরে কোন কান্না করো না
পারলে তাদের জন্যে কেঁদো যারা কান্না নিয়ে বেঁচে আছে
যাদের জন্যে আমি কিছু করতে না পেরে অনেক রাতে
কাঁদতে কাঁদতে ঘুমোতে যাচ্ছি।
আমার মৃত্যুর পরে কোন খই ছড়ানো নয়
পারলে কোন ক্ষুধাতুর শিশুকে একদিন ঘরে ডেকে
খাইয়ে দিও, যাদের কথা আমি রোজদিন ভেবেছি
অথচ থালাভরতি খাবারের সামনে তাদের কথা বেমালুম ভুলে গেছি।
আমার মৃত্যুর পরে আমার জন্যে কোন ফুলের মালা নয়
সম্ভব হলে পয়লা ফাল্গুনে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কিছু ফুল
প্রেমের গোলামদের বিলিয়ে দিও ; কারণ আমি
প্রেমিকার জন্যে ফুল না পাওয়া ছেলের বিমর্ষ মুখ দেখেছি।
আমার মৃত্যুর পরে আমার কবরের ‘পরে কোন এপিটাফ নয়
পারলে এক্সিডেন্ট প্রন এলাকায় কিংবা স্কুলের সামনে লিখে দিও
‘এখানে তোমার জেট গতির জীবন কচ্ছপের কাছে হার মানতে চাইছে’
‘এখানে তোমার আত্মারা কিছু শিখতে এসেছে, কোলাহল করে নিজেকে
বঞ্চিত করো না’।
আমার মৃত্যুর পরে চন্দন কেন কোন কাঠই নয়
পারলে আমাকে একটু বেশ গভীর গর্তে রেখো
আর দুটো চারা লাগিয়ে দিও-একটা বকুল আর একটা শিউলি
কারণ আমি প্রত্যেক বসন্তে ক্রমহ্রাসমান গাছেদের ব্যর্থ ইস্তেহার ঝরতে দেখেছি।
আমার মৃত্যুর পরে আমার আত্মার জন্যে কোন তর্পণ বা বাৎসরিক নয়
পারলে আমার বেঁচে থাকা কিছু উদ্বায়ী ইচ্ছেকে পূর্ণতা দিও
কারণ আমি মরলেও ওরা বেঁচে থাকতে চায় অমরতা চায়
মানুষের বুকে বুকে আর গাছের ছায়ায় ছায়ায়।