অধিক রাতে ক্লান্ত হয়ে যখন ঘরে ফেরে
মনি ছোট্ট বাম হাতটা দিয়ে
মুক্তিযোদ্ধা বাবার গলাটা জড়িয়ে ধরে –
ডান হাতে হাত পাখা দিয়ে বাতাস দেয়
আর প্রস্ফুটিত গোলাপের মত শুধু হাসে।
পাশের ঘরের লতার সাথে খেলতে খেলতে
একটু দ্রূতই বেড়ে উঠছে সাত বছরের মনি
সেদিন সন্ধার পরে যখন আঁধার নামে
মনি একটা কুপি হাতে নিয়ে
রান্নাঘরের পেছনে যায় পেসাব করতে
লতার রাজাকার বাবা ছিল
এমন একটা সুযোগের অপেক্ষায়।
লম্পটটা এগিয়ে গিয়ে
একটা দেঁতো হাসি হেসে
ঝক্কাস করে ফুদিয়ে নিভিয়ে দেয় কুপিটা
মেয়েটি কিছু বোঝার আগেই গামছা দিয়ে
নির্মল মুখটা বেঁধে ফেলে রাজাকারটা।
পাঁজাকোলা করে তুলে অদূরে নিয়ে শুয়ে দেয়
সারমেয়টা খুলে নেয় পোশাক-আশাক
লালা মাখিয়ে ছোট্ট চৌবাচ্চাটা চিরে
জোর করে ঢুকিয়ে দেয় সজারুর বিষাক্ত কাটা।
কি একটা কাজে মনির মা আসে রান্নাঘরের পেছনে
গোঙ্গানির শব্দ শুনে কাছে এগিয়ে যায়
মুখ বাঁধা উলঙ্গ মনির পাশে লতার বাবাকে দেখে
“লতারে’’-- বলে জোরে একটা চিৎকার দেয়।
এক ডাকেই লতাসহ অনেকেই ছুটে আসে
যন্ত্রণায় দাপড়াতে দাপড়াতে
শহিদ মুক্তিযোদ্ধার মতোই রক্ত ঝড়তে ঝড়তে
লতার কানে কানে বলে যায় -
“তোর বা-বা রাজা-কা-র’’।
রাজাকারের ধর্ষণের হিংস্র বিনোদনে
মূহূর্তেই ছোট্ট প্রাণ পাখিটা খাঁচা ছেড়ে
দূর্গন্ধ ফেনায় ডুবে যায়।
অবস্থা বেগতিক দেখে রাক্ষসটা
একাত্তরের মতই ছায়া ভেঙ্গে যায় পালিয়ে
লতা দৌড়ে ঘর থেকে একটা বেয়োনেট নিয়ে
সর্পচোখে সারমেয়টার পেছনে আঁধার ফুঁড়ে
বিষাদ নদীর মোহনায় হারিয়ে যায়।