আমোদ আছে,
তৃপ্তি আছে,
শৌর্য আছে।
দুই দণ্ডের তন্দ্রার বড়ো অভাব।
লালিত্য মাখা ভোরের ভিতর,
কর্মব্যস্ত প্রহর আছে।
নিদ্রাসুলভ রাত্রির বড়ো অভাব!
অভাবের তাড়নায়,
বিকিয়েছি বিবেকের মাথা।
ভিজিয়েছি রঙিন জলের শিখা।
নিভে গেছে নক্ষত্রের আলো।
ঝড়ে ভাঙা গাছ থেকে, পেড়ে এনেছি
পরিত্যক্ত বাবুইয়ের বাসা।
ঘুমন্ত জোনাকির মুখে জল দিয়ে,
ওদের নিভন্ত জীবন উৎসর্গ করেছি,
ক্ষুধার্ত আঁধারের— নৈবেদ্য-র থালায়।
বিনিময়ে, তৃষার্ত চোখের ভিতর;
জন্মেছে লোহিত সরোবর।
তবুও, স্বচ্ছ জলের বড় অভাব।
নিদ্রার বড় অভাব!
একঘরে হয়ে যাওয়া হৃদয়-কুটিরে
ছোট্ট একটি ঘরে;
ছেঁড়া মাদুরের কোলে মাথা রেখে,
ঘুমিয়ে গেছে কথাদের কারিগর!
আহারে! কতই সুভাগিনী!
চোখের জমিন যার, নিশুতির নিদে উর্বর!
আমি তবে শাস্তি পাই কোন পাপের?
কোনরূপ ঘৃণ্য কৃতকার্যের ফলে,
ঋজুত্ব হারানো স্নায়ুদের,
তন্তুর মতো সুতোয়
বেঁধে গেল অতন্দ্রিত জট!
বলে দিয়ে যাও!
ও গো অনুর্বর মাতৃক্রোড়—
একবার বলে দিয়ে যাও।
অন্ধ গ্যালিলিও—
একবার বলে দিয়ে যাও।
বিরহের যাতনা সিক্ত,
বিনিদ্র শিমূলের তুলো—
অধমের অপরাধ বলে দিয়ে যাও!
বলে দিয়ে যাও...
(বলে দিয়ে যাও...)
অজ্ঞাত দরাজ কণ্ঠে
মুখরিত শান্ত আঁধারে,
শিহরিত হলো শরীর।
কারা যেন বলে যায়—
“আদপে নিদ্রাহীন চোখ দুটোই জীবন।
ঘুমের কপাট বন্ধ হলেই,
ভিক্ষা নিয়ে ফিরে যাবে,
বিনিদ্র মৃত্যু-ফকির!”