এক -দুই করে শেষ কয়েকটি জন্ম জুড়ে
আমি শুধু আটকে থেকেছি নীল নর্দমা জলে।
দেখেছি কিভাবে কীটেরা মুহূর্তে বিপন্ন করে একটি জীবন।
তারপর অগণিত বার পৃথিবী সূর্যকে প্রদক্ষিণ করেছে।
তবুও ক্লান্তি নেমে আসেনি তার শরীরে।
বিষন্নতা গ্রাস করেনি তার কক্ষপথ।
অবশেষে জন্মান্তরের পথ ধরে আমি একটি পাখির জীবন পেলাম।
ভেবেছিলাম পাখির জীবনে থাকেনা কোনো বিষক্রিয়ার ভয়।

কিন্তু মেঘের মায়াজাল ভেঙে যখন আমি
নেমে এসেছি একটি পিপুল গাছের নীচে,
দেখি আমাকে ঘিরে রেখেছে একদল বিচিত্র পাখি ।
যারা হারিয়েছে ডানার বিস্তার।
যাদের ঠোঁটে শুধু লেগে রয়েছে ক্ষুধার রঙ।


আমি গাংচিল হতে চাইনি,
যে গাংচিল মুহূর্তে মিশিয়ে দিতে পারে সূর্যাস্তের আগুন ,বিবর্ণ নদী জলে।
আমি মাছরাঙা হতে চাইনি,
যে মাছরাঙা অনায়াসে ছিনিয়ে নিতে পারে অন্যের বাঁচার অধিকার।
আমি শুধু কয়েকটি খড় কুটো সাজিয়ে নিতে চেয়ে ছিলাম।
বানিয়ে নিতে চেয়েছিলাম শালিকের ঘর।

এখন এই প্রতারক পৃথিবীতে খড় কুটোর
বড়ই অভাব।
চারদিকে পড়ে থাকা বিস্তৃত বালুরাশি মাঝে ,
আটকে রয়েছে সমস্ত পাখিদের পা।
শুকনো পাতার মতো ঝরে গেছে ডানার পালক।
তবু ওরা এক আশ্চর্য স্পর্ধা নিয়ে
করে চলে তাপ আর শূন্যের বিলাস।
সর্বগ্রাসী বালুতটে জমিয়ে রাখে নীল সুখের আতর।


পরমুহূর্তেই দেখি আমার শরীরে শুরু হয়ে গেছে পালক স্খলন।
এই আহত জীবন আমি চাইনি।
এই ক্ষুধার্ত জীবন আমি চাইনি।
মেঘ আর শুন্যতা কে অতিক্রম করতে, দুখানি ডানা চেয়েছিলাম।
আমি নীল সুখের আতর চাইনি,
আমি নীল আকাশ চেয়েছিলাম।