জলরে আমার! মিথ্যা বলিস না;
আমার মুঠোয় বর্ণহীনা আজ করবী লাল
ফাগুন ঠোঁটে রোদেলা মেয়ে কোন আকাশে কাল
সত্য কেন তোরই মতন ঘোলাটে হল না।।

জলরে আমার! মিথ্যা বলিস না;
বারুদ মাখা কপাল আমার, স্বপ্নীল চোখে স্বাধীন,
তোর বুকে সব লাশের মিছিল, বোয়াল ছিঁড়ে প্রতিদিন
তোর চলা কি প্রতিবাদে একটু থামে না।।

জলরে আমার! মিথ্যা বলিস না;
কলসী ভাঙ্গে তোর অভাগী কলংক টিপ দেখে
থেতলে যাওয়া কোটর থেকে চোখটা খোঁজে মাকে
তুই কেন জল স্বচ্ছ প্রতীক ‘মুক্তি’ হলি না।।

জলরে আমার! মিথ্যা বলিস না;
জীবন নামের ধারক শুধু, রূপক সে তুই না
তোর সাথে কেন এক হল না – আমার চোখের বন্যা।।



==============
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় এক মুক্তিযোদ্ধা তার গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিল তার পরিবার কেমন আছে তা দেখতে। তার বাড়িতে যাবার আগে কাছের ধারে পুকুরে সে গেল একটু মুখ ভেজাতে। সে তখন দেখল নীলবর্ণা পানি লাল রঙ ধারণ করেছে আর তখনই সে বুঝল হানাদারেরা তার পরিবার আর তার গ্রামের মানুষদের কি সর্বনাশ করেছে। সে আর পানি পান করতে পারল না, কান্না থামাতে পারল না, আর মেলাতে পারল না তার হাতের মুঠোর জলের রঙ আর তার অশ্রুর রঙ।