আমি প্রহরী
আর কারাগারে বন্দী রাজদ্রোহী
প্রায় ত্রিশোর্দ্ধ তার বন্দি জীবন – আমি শৈশব হতে শুনেছি;
আজ আমি পাহারায়-
রাজাধিরাজ আমাকে সদ্য নিয়োগ দিয়েছেন
সহস্তে তরবারি তুলে দিয়েছেন
মণিমুক্তার মালা পরিয়েছেন
“যুদ্ধ পারদর্শী”, বলে ভূষিত করেছেন
মহাকবি – গুণীশিল্পী স্তুতি পাঠ করেছেন
গজগামিণী বেষ্টিত আমার ক্ষুদ্রাত্মাকে
উন্নত পরিবেশনে তুষ্ট করেছেন।।
আমি প্রহরী
নির্ঘুম আমার চোখ – প্রতি নিশ্বাস আমি সন্দেহে রাখি
আমি কড়া পাহারায় রত,
আমার খ্যাতি স্বর্গত পিতার নিকট নজরানা দেয়
মাতার প্রার্থণায় মন্দিরা বাজে মন্দিরে
প্রতিবেশী আর বান্ধবেরা গর্ব-কথা ছড়ায়।।
আমি প্রহরী
নিঃসন্দেহে আমি সেরা – যুদ্ধপ্রান্তরে আমি দুর্ধর্ষ সিংহ
আমার তান্ডবলীলায় ভূপাতীত সহস্র শত্রুপ্রাণ
তবে এখানে কেন আমি?
দুর্বল বৃদ্ধকে পাহারায় কেন মহাবীর?
ঐ যে বাইবেল স্তবক পাঠ করে চলেছে সে
নিঃশব্দ জীবন – নিস্তেজ প্রাণ
সাদা চুলে কুঁচকানো চর্মে চঞ্ছলতা – মৃত;
একটি ধমকেই যেন শ্বাসরুদ্ধ।।
আমি প্রহরী
তন্দ্রালু মনে কৃতিত্ব ভাবি-
বৃদ্ধের ভালে করুণাই যথেষ্ট!
সহসা-
ঘুমের কপাট খুলল
আমি প্রহরী বেষ্টিত – “রাজদ্রোহী পলাতক!
---------------------রাজদ্রোহী পলাতক!”
কোন কৃতিত্ব আমায় জীবন ভিক্ষা দেবে না
কেউ গর্দান হারাবে বলে সুপারিশ করবে না
জল্লাদ খড়গ তলে – বুঝেছি তারতম্য;
যার পাহারায় ছিলাম-
-------------------তিনি রাজা
-------------------আর আমি প্রহরী।।
নোটঃ----- "এক বৃদ্ধ রাজদ্রোহীকে পাহারায় রাখা হয়েছিল এক অল্প বয়স্ক মহাবীরের কাছে। মহাবীর তার ক্ষমতাকে এত উন্নত জানতো যে তার সামনে বৃদ্ধ বন্দীকে তুচ্ছ মনে করছিল। আর বৃদ্ধ রাজদ্রোহী ঠিক এটাই চাইছিল।"