দিঘির ঘাটে জলের 'পরে চোখ রেখেছি জলে।
ঢেউয়ের নাচন গাছের ছায়ার খন্ড খন্ড শরীর -
বাতাস খেলায় নাওয়ের উঠা নামা -
কিনার ঘেঁসে হংস মিথুন করছে মাতামাতি।
তখন সবে নামছে গগন 'পারে,
হলুদ বেলার রংঙের লুটোপুটি,
বকের পাখা ভাসছে নীলে সাথির টানে।
বিহান বেলার ধবল-কালো পয়স্বিনী,
মাঠের ধারে উদাস চ'ড়ে তাকায় সড়ক পানে।
এইতো বুঝি নামবে আধাঁর মাঠের কিনার জুড়ে
দোস্যি ছেলে এক্কা খেলে
মনের রঙে উড়ায় পথের ধূলি
শেষ খেলাটা খেলার তোড়ে শুধুই হুড়ো হুড়ি।
হাটের বাঁকে শিমুল ফাঁকে
নীড় পালানো দস্যি ছেলের খোঁজ লেগেছে
ত্রসন প্রাণের জন্মদায়ের আকাশ ভাঙা চিতে।
এবার আসুক শক্ত করে বকবো বাঁদোরটিকে।
উদোম কায়া ধুলোর শরীর
স্বেদ নেমেছে চিবুক যুতি,
আকাশ-কালো মেঘ ছড়ানো এলো কেশে
যেন, ধুর্জটি ওই প্রলয় নেচে দাঁড়ায় এসে,
খাপছাড়া কোন পথের ছেলে থোরাই করে কেয়ার
এক তুরিতেই কালো মনের করকানি দুর করে।
দিঘির ঘাটে জলের পরে চোখ রেখেছি জলে।
মনের ছায়া নামল ঝেপে বিধুর তলে জলে।
সোপান গুলি ঘাটের ধারে ক্রুর হাসিতে
অতীত কালের কিশোর বেলার গল্প বলে -
"এই শোনা না"- এই ঘাটেতে ঝাপার-খেলায় আছার খেয়ে -
পিছলে পরে বন্ধুরা সব চ্যাং দোলাতে শুইয়ে দিলো বরাই গাছের ছায়ে।
আর, ঠেং দুলিয়ে হাত বুলিয়ে বেদন স্থানের তালাশ।
আমি কি ছাই কাঁচা ছেলে?
এক্টুকু তেই কি নাকাল হবো?
বন্ধুদের কে ব্যর্থ প্রয়াস বুঝিয়েছি
ফির ঝাঁপ মেরে সেই পুকুর জলে।
মনের আগল খুললো দূরের
মস্ত পোয়াল-ডিবির চুড়ায়
দেখে বাষ্প - আগুন ধোঁয়ায়,
পৌষ মাসের দুপুর-'পরে কিশোর বেলার খেলা।
পৌষ বেলা,
বরফ ধোয়ায় বাতাস জুড়ে হিমেল চাবুক কষায়
কুকুরটি ঐ খড়ের গাঁদার নরম তাপে
শাবক কোলে জীবন রসের সোহাগ রত।
বাড়ির কোণে খেজুর গাছের শীর্ষ ডগায় গাছি,
কোমর খিঁচে শরীর থেকে রস ঝরানোর হাড়ি ।
জমেছে রস অনেক,
জীবন ভরা রস।
অনেক বছর ধরে একটু একটু করে
ভালোবাসার জমানো রস,
অভিভূত করার রস,
মগ্নতার রস।
নিস্তব্ধতা নেমে আসা খরের গাঁদার ওপারে
এক কিশোর আর একটি মেয়ে
পৃথিবীকে ভূলে যাবার খেলায় মগ্ন।
অল্পো বয়সী মেয়ে কিশোরের নরম ঠোটে আঙ্গুল ছুঁইয়ে করেছিলো প্রশ্ন -
"ভালোবাসা জন্ম নিয়েছিলো কবে? কোথায়? কোনখানে?"