যখন গ্রামে ফিরি, মনে হয় যেন
যুদ্ধবিধ্বস্ত কোন এক প্রান্তে এসেছি।
মাঠ ফাঁকা, বাড়ি ফাঁকা, নেই আর কেউ,
নেই সেই চেনা কোলাহল, নেই কোন সঙ্গ।

নবান্নের দিনে যেখানে উৎসব হবার কথা,
সেখানে যেন শূন্যতার এক দীর্ঘশ্বাস।
স্মৃতির আঙিনায় দাঁড়িয়ে খুঁজে ফিরি—
খেলার মাঠে সঙ্গীসাথী নেই , হাসিখুশির দিন শেষ।

খড়ের পালায় গড়াগড়ি, সন্ধ্যার ধানবানার শব্দ,
পিঠা, মুড়ি আর চিড়ায় ভরা মধুর গল্প।
শীতের সকালে আগুন পোহানোর তাপ,
খেজুরের রসে ভেজা সেই সুখমাখা মন।

কখনো ভাবিনি, সেই গ্রাম থেকে এত দূরে—
বাবার চাকরি, পড়াশোনা, জীবনযাত্রার দৌড়।
গ্রামের জন্য মায়ায় হলাম ব্যাকুল,
তবু পারলাম না কিছু করতে সেই মাটির জন্য।

গ্রামে গেলে আজও অনুভব করি এক শক্তি,
মনে হয় যেন এটাই আমার চির আপন স্থান।
তবু সেই ভালোবাসার গ্রামে দীর্ঘদিন থাকা হয় না,
শুধু থেকে যায় শূন্যতার স্মৃতি আর হারানোর যন্ত্রণা।

গ্রামের মাঠ, গ্রাম্য জীবনের টান
আমার হৃদয়ে রেখে গেছে এক চিহ্ন-দায়।
যুদ্ধবিধ্বস্ত নবান্ন আজও ডাকে আমাকে,
তবু ফিরতে পারি না, পারি না কিছু করতে।

তবু স্মৃতি ধরে রেখে, মন বলে এক কথা,
এটাই আমার গ্রাম, এটাই আমার ব্যথা।