শ্যামলপুরের কুয়াশা ঘেরা গ্রাম,
সেখানে বাল্যজীবন ছিল তার।
তেরো বসন্তে স্বপ্ন তার চোখে,
বইয়ের পাতায় ডুবত প্রাণ মেখে।
বাবা তার বলল, "পাত্র বড় ভালো,
দারিদ্র্যের ভারে করবো দায় মুক্ত তারে ।"
সমাজের রুগ্ন চোখের দায়ে, রুদ্ধ কণ্ঠস্বরে,
বধূর বেশে সে শ্বশুরালয় গেলো চলে।
শ্বশুরবাড়ি আপন হলো না কোনো দিন,
কিছু মাসের ভেতর এলো মৃত্যু-তরণী।
ত্রিশের স্বামী চলে গেল হঠাৎ,
তাকে অন্ধকারে ফেলে।
বাল্যবিধবা নাম, তার মুখ ভার বিষণ,
গ্রামের মানুষ দিল দোষের আঘাত,অলক্ষী বলে তারে।
তবু থামেনি সে, হৃদয়ে সাহস ধরে,
স্কুলের শিক্ষকের কাছে গিয়ে বলে:
“পড়তে চাই আমি, নিজ পায়ে দাঁড়াই,
স্বপ্নগুলো মুছে, নয় তো মরুভূমি পাই।”
শিক্ষকের হাতে ধরে খুলল পথ তার,
গ্রামের মেয়ে দেখল নতুন আলোর দ্বার।
অবশেষে হলো সে ‘আলোর দিশারি’ এক,
দৃষ্টান্ত হলো বাল্যবিবাহে প্রতিবাদের রেখ।
কুপ্রথা ভেঙে বলল সে সাহসে,
তালি হবে গনযোগে বাল্যবিবাহ যেথা দেখি।