বুকোওস্কি কে
ছোট একটা ঘর ছিল ছাদে-একজনের থাকার মত
এক সন্ধ্যায়-তখন শীত বেশ
কুয়াশায় হেঁটে আসে বুড়োটে লোকটা
"থাকতে দিবি চিলেকোঠায়?"
"আপনি বুকোওস্কি না? আপনার কবিতা দারুণ লাগে"
তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে উঠে যায় ছাদে
সাথে যায় মদের বোতল
মদের গন্ধ ভেসে আসে রাতে, সাথে বেশ্যাদের কল্লোল
অন্ধকারে কলম চলে দুর্নিবার গতিতে
আত্মীয়-পরিজন স্বাভাবিকই চিন্তান্বিত
"এই পাড়-মাতাল লম্পটটাকে পুষেছিস?"
আমি আমতা আমতা করে কবিতা পড়ি
"মন্দ লেখে না লোকটা" এ কথাও বলি
একাকিত্বে বুকোওস্কি উল্টোপাল্টা লিখেই চলে----
খবরের কাগজে পড়লাম সে মারা গেছে
বুঝতে পারলাম না কিছুই--
বাইরে হাস্যোজ্জ্বল পৃথিবী
হাসতে হাসতে একে অপরের গায়ে ঢলে পরে ছেলে মেয়ের দল
ফুর্তিময় প্রাণে- আজ সাউথ সিটি যাব, কাল সিটি সেন্টার
ওর জন্মদিন-অমুকের বিয়ে-তমুকের অন্নপ্রাশন
গয়নার দোকানে ধনতেরাসের লম্বা লাইন
বয়ফ্রেন্ডের হাত ধরে মেকআপ আর মিনিস্কার্টে মেয়েটা বলে-
"শুনলাম কোন এক কবি মরেছে?"
আইসক্রিম খেতে খেতে ছেলেটা বলে-
"মাতাল লম্পট ছিল, গেছে বাঁচা গেছে"
এখনও ঝোলেনি চিলেকোঠায় তালা, তবে-
ঝুলব ঝুলব করছে, তবুও
অসমাপ্ত কিছু কবিতা চেয়ে রায় অমাবস্যার আকাশে এখনও
আর কেউ লিখবে না হয়ত বুকফাটা এই অন্ধকার ঘরে
শুধু বলে যাবে সিগারেট ছাই, মদের বোতল , মোটা চশমার ফ্রেম
"Burning in water drowning in flame"