পরিযায়ী শ্রমিক
=============
শ্রী নীরদ /১৪/০৬/২০
================
পরিযায়ী শ্রমিক পথ হতে পথ চলে
নেমেছে লকডাউন না কয়ে না বলে,
হঠাৎ বন্ধ কলকারখানা আজ সব্ই,
পৌঁছাতে চায় নিজ নিজ গ্রামে ভবি।

রুজি রোজকার হঠাৎ হয়েছে বন্ধ
'দিন আনি দিন খাই' রীতি তো স্তব্ধ ,
ছেলে বউদের শুষ্ক মুখেতে কান্না
বন্ধ দুবেলা দুমুঠো যোগাতে রান্না।

এতদিন ওরা সয়েছে বিভুঁইয়ে কষ্ট
দেওয়ালে পিঠ ঠিকেছে এতো স্পষ্ট
অসহায় ওরা যোগাতে খান পান
পথে নেমে আসে জন্মভূমির টান।

হাজারো মাইল হাঁটতে থাকে তারা
বাক্সপ্যাঁটরা গলাতে ঝুলায়ে সারা,
ক্ষুধাতুর শিশু ক্লান্ত ও দিশাহারা
স্বপ্ন হারিয়ে নিথর চোখের তারা।

রাজপথে আজ ওদের পায়ের চিহ্ন ,
ওরা যেন কোন বিদেশি নাগরিক ভিন্ন ,
ওদের কথা কখনো ভেবেছে কেউ?
আজি জনস্রোতে ক্লান্ত পরিযায়ী ঢেউ।

এধারে ওধারে জনতা যে বিক্ষিপ্ত
পায়ের নীচেতে মাটি হয় উত্তপ্ত
চটিজুতা সব হয়ে গেছে আজ ক্ষয়
মুখেতে সবার জীবন হারানোর ভয়।

নাহি সরকারি হিসাবের তহবিল
কোথাকার তারা কোথা গিয়েছিল?
মেটাতে তৃষ্ণা মেটাতে তাদের ক্ষুধা
নেই সরকারি কোন পরিকল্পনা সিধা।

ক্লান্তি তাদের ঘিরেছে শরীর জুড়ে,
যেখানে সেখানে নেতিয়ে চাদর মুড়ে,
যান্ত্রিক রথ নিমেষে নিয়েছে কেড়ে
কতশত প্রাণ, তবুও তারা পথে পড়ে।

জীবন মানেই এগিয়ে যে পথ চলা
ঘরের টানে তারা আজ পথভোলা,
যেমন করেই যেভাবেই তারা পারে
লক্ষ্য তাদের গ্রামের প্রান্ত দ্বারে।

অনেক কষ্টে পথ চলে অবশেষে
পৌঁছে ছিল গ্রামের প্রান্তদেশে,
দিকে দিকে দেখে পথ যে অবরুদ্ধ,
পরিযায়ী তারা, হতে হবে এবে শুদ্ধ।

আশায় আশায় কষ্টে বেঁধে বুক
ভেবেছিল তারা মেটাবে তাদের ভুখ,
সেখানে দেখে পরিজনেরাও বিমুখ
তোমাদের লাগি হায় পরিযায়ী শ্রমিক
ভাগ্যদেবতা লেখে নাই কোন সুখ!