কৃচ্ছ্রসাধন
--------------
-----নজরুল ইসলাম খান

দশ  টাকা বেশি ভাড়া চেয়েছে বলে
দশ মিনিট  বচসা করি রিকশাওয়ালার সাথে।
সবজি বিক্রেতাকে পাঁচ টাকা কম দিতে
দর কষাকষি করি পাঁচ মিনিট ধরে।
ডায়াবেটিস হওয়ার ভান করে বিশ টাকা বাঁচাতে
বিশ মিনিট  হেটে বাসায় ফিরি অফিস শেষে।
দু হাজার টাকার অভাবে
নিম্নমানের বাসায় ভাড়া থাকি।
বলে বেড়াই এলাকায় ভালো বাসা পাওয়া  যায় না।
মেয়ের প্রাইভেট টিউটরকে একদিন নাস্তা না দিলে
কত টাকা সেভ হয় হিসাব করি।
মন না চাইলেও এগুলো করি বছরের পর বছর ।

আমাদের মত নিম্নবৃত্তের টানাটানি যায় প্রতিনিয়ত।
আমাদের বাড়তি আয় থাকে না কখনো ।
আমরা একে অপরের সাথে যুদ্ধ করি জীবন সচল রাখতে ।
আমাদের জীবন চলে পা ভাঙা  কুকুরের মতো টেনে টেনে ।

আর, আমাদের পাশের কিছু চেনা  মানুষের রয়েছে
সুউচ্চ বাড়ি,
আলট্রা মডার্ন গাড়ি,
ব্যাংকে টাকা কাঁড়ি কাঁড়ি ।
এন্টি করাপশনের ভয়ে বিদেশে  পাচার করে
বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ।
সামান্য সর্দি জ্বরেও ডাক্তার দেখাতে  যায় সিংগাপুর,
লন্ডন, আমেরিকায়।
মাসে মাসে বেড়াতে যায় ব্যাংকক, নিউইয়র্ক,কানাডায়।
অথচ, আমাদের ক্যান্সার হলেও যায়গা হয় না
জেনারেল হাসপাতালের বারান্দায়।
সময় এবং টাকার অভাবে  বেড়াতে যেতে পারি না পাশের
কক্সবাজার কিংবা কুয়াকাটায় ।
মাসেও একবার জোটে না ভালো মানের খাবার।

আমরা কী রকম স্বাধীনতা ভোগ করছি তবে।
একপক্ষের অবস্থান  দারিদ্র্য সীমার নিচে,
অন্য পক্ষ মালিক হাজার কোটি টাকার ।
এক পক্ষের সংসার চালাতে ওঠে নাভিশ্বাস,
অন্য পক্ষ  জীবন যাপন করে রাজার হালে।
এক পক্ষ  করে কৃচ্ছ্রসাধন,
অন্য পক্ষ ব্যয় করে দেদারসে ।

১৫/০৭/২৪