গয়নার নৌকা ছড়ে তাঁহার নাগরের
আসতে একদমই দেরি হলনা, পাড়ে
বসে পাশ থেকে গবুচন্দ্রের মত তাঁহার
নাগরের অধরে কথার তালে সিগারেট
টানার খুবি উপলব্ধি করছিলাম।
আশ-পাশে মানুষের ভীড় বাড়ছিল,
নাগর এসে আমাকে জিগাসা করলো
-ভাই নৌকার ঘন্টা কত?
শ’টাকায় দর-দাম ঠিক করিয়া দু’জনে
উঠিয়া বসিল।
-স্যার কয় যাবেন?
-উত্তর দিকে নৌকা কম, ঐ দিকে যান।
সিগারেট খান? এই নিন এটা আপনার।
মনে মনে অনেক খুশি হয়েছি,
সাহেবের মত মানুষ হয়না।
-সাহেব আপনি অনেক ভালো মনের
মানুষ, আপা আপনি কিন্ত জিতছেন।
আপাত দৃষ্টিতে তাদের কথোপকথন
খুনশুটি মনে হলেও, বেশ খানিক দূরে
যাবার পর কূটবাসী নাগরের কূটযুদ্ধ
আমার কাছে স্পষ্টতর হতে লাগলো।
“তোমাকে ভালোবাসি এমনটা আমি বলিনি।
তোমার আগে কাউকে ভালোবাসিনি, ভালো
লাগেনি এমনটা তুমি ধরে নিতে পারো, তাতে
আমার কি আসে যায়? আমি শুধু নিজের কিছু
অভ্যাসের দাস হয়ে আছি, অধিকার দিয়েছ,
তাই অভ্যাসগুলোর চর্চার সুযোগ পেয়েছি।”
“ভালোই বলেছ! আচ্ছা স্বেচ্ছায় গরল
পান করার পর, আমি যদি মাটিতে লুটিয়ে
পরি আমাকে বাঁচাতে কি তুমি আসবেনা?
নাকি তখনো নীতি কথার ঝর্ণা আমার
কানে প্রবেশের রাস্তা বানিয়ে বলবে—
তুমি তো জেনে শুনে বিষ পান করেছে, এখন মর।
ধর্মের দোহায় দিয়ে আমাদের সম্পর্কে
আর ছোট করতে চাইনা, শুনেছি বিয়ে
তার ইচ্ছেতে হয়, তোমাকে যদি না পাই
তবে মরে যাবো। রক্তের বন্ধন ছিন্ন করে
আসতে খুবই কষ্ট হয়েছে আমার, তবুও
আমি এসেছি, তোমাকে পাব বলে।
সর্বস্ব দিয়ে তোমাকে ভালোবেসেছি, অমন
করে মুখ ফিরিয়ে নিওনা তুমি। তুমি ছেড়ে
গেলে যে আমার সর্বস্ব যাবে।"