৭৬.

পল্লবিত তরুলতা কতই আছে কাননময়,
দেওদার আর থলকমলে, জান কেন মুক্ত কয় ?
দেবদারু তরুর শত কর, তবু কিছু চায় না সে;
থলকলমীর দশ রসনা, তবু সদা নীরব রয় ।

৭৭.

আমার সাথী সাকি জানে মানুষ আমি কোন্ জাতের,
চাবি আছে তার আঁচলে আমার বুকের সুখ-দুখের ।
যেমনি মেজাজ মিইয়ে আসে গেলাস ভরে দেয় সে মদ,
এক লহমায় বদলে গিয়ে দূত হয়ে যাই দেব-লোকের ।

৭৮.

আরাম করে ছিলাম শুয়ে নদীর তীরে কাল রাতে,
পার্শ্বে ছিল কুমারী এক, শারাব ছিল পিয়ালাতে;
স্বচ্ছ তাহার দীপ্তি হেরি' শুক্তি-বুকে মুক্তা-প্রায়
উঠল হেঁ কে প্রাসাদ-রক্ষী, "ভাের হল কি আধ-রাতে ?"

৭৯.

মন কহে, আজ ফুটল যখন এন্তার ঐ গোলাপ গুল্
শরিয়তের আজ খেলাফ করে বেদম আমি করব ভুল ।
গুল্-লালা-রুখ্ কুমারীদের প্রষ্ফুটিত যৌবনে
উঠল রেঙে কানন-ভূমি লালা ফুলের কেয়ারী-তুল্ ।

৮০.

হায় রে, আজি জীর্ণ আমার কাব্য পুঁথি যৌবনের ?
ধুলায় লুটায় ছিন্ন ফুলের পাপড়িগুলো বসন্তের ।
কখন এসে গেলি উড়ে, রে যৌবনের বিহঙ্গম !‍
জানতে পেরে কাঁদছি যখন হয়ে গেছে দেরি ঢের ।


(কাব্যগ্রন্থঃ রুবাইয়াৎ-ই-ওমর খৈয়াম, ফেব্রুয়ারী ২০১০, প্রকাশকঃ বিশ্ব সাহিত্য)