৩৬.

তিন ভাগ জল এক ভাগ থল, এই পৃথিবীর এও মায়া,
এই ধরাতে দেখছ যা তার সকল-কিছু সব মায়া,
এই যে তুমি বলছ যা সব, শুনছ কলরব মায়া ।
গোপন প্রকাশ সত্য মিথ্যা এসব অবাস্তব মায়া ।

৩৭.

দোষ দেয় আর ভর্ৎসে সবাই আমার পাপের নাম নিয়া,
আমার দেবী প্রতিমারে পূজি তবু প্রাণ দিয়া ।
মরতে যদি হয় গো আমার শারাব পানের মজলিশে__
স্বর্গ-নরক সমান, পাশে থাকবে শারাব আর প্রিয়া ।

৩৮.

মুসাফিরের এক রাত্রির পান্থ-বাস এ পৃীথ্বতল__
রাত্রি-দিবার চিত্রলেখা চন্দ্রাতপ আঁধার-উজল ।
বসল হাজার জামশেদ ঐ উৎসবেরই আঙ্গিনায়
লাখ বাহরাম এই আসনে বসে হলো বেদখল ।

৩৯.

কারুর প্রাণে দুখ দিও না, করো বরং হাজার পাপ,
পরের মনের শান্তি নাশি বাড়িও না তার মনস্তাপ ।
অমর আশিস লাভের আশা রয় যদি, হে বন্ধু মোর,
আপনি সয়ে ব্যথা, মুছো পরের বুকের ব্যথার ছাপ ।

৪০.

ছেড়ে দে তুই নীরস বাজে দর্শন শাস্ত্রপাঠ,
তার চেয়ে তুই দর্শন কর প্রিয়ার বিনোদ বেণীর ঠাট্ ;
ঐ সোরাহির হৃদয়-রুধির নিষ্কাশিয়া পাত্রে ঢাল্,
কে জানে তোর রুধির পিয়ে কখন মৃত্যু হয় লোপাট ।


(কাব্যগ্রন্থঃ রুবাইয়াৎ-ই-ওমর খৈয়াম, ফেব্রুয়ারী ২০১০, প্রকাশকঃ বিশ্ব সাহিত্য )