১৬.
ব্যথায় শান্তি লাভের তরে থাকত যদি কোথাও স্থান
শ্রান্ত পথের পথিক মোরা সেথায় জুড়াতাম এ প্রাণ ।
শীত-জর্জর হাজার বছর পর নবীন বসন্তে
ফুলের মতো উঠত ফুটে মোদের জীবন-মুকুল ম্লান ।
১৭.
বুলবুলি এক হালকা পাখায় উড়ে যেতো গুলিস্তান,
দেখল হাসিখুশি ভরা গোলাপ লিলির ফুল-বাথান ।
আনন্দে সে উঠল গাহি, "মিটিয়ে নে সাধ এই বেলা,
ভোগ করতে এমন দিন আর পাবিনে তুই ফিরিয়ে প্রাণ!"
১৮.
রূপ-মাধুরীর মায়ায় তোমার যদিন পার, লো প্রিয়া,
তোমার প্রেমিক বঁধুর ব্যথা হরণ করো প্রেম দিয়া !
রূপ-লাবণীর সম্ভার এই রইবে না সে চিরকাল,
ফিরবে না আর তোমার কাছে যায় যদি বিদায় নিয়া ।
১৯.
সাকি! আনো আমার হাতে মদ-পেয়ালা, ধরতে দাও !
প্রিয়ার মতন ও মদ-মদির সুরত-ওয়ালী বরতে দাও !
জ্ঞানী এবং অজ্ঞানীরে বেঁধে যা দেয় গাঁটছড়ায়,
সেই শারাবের শিকল, সাকি, আমায় খালি পরতে দাও !
২০.
নীল আকাশের নয়ন ছেপে বাদল-অশ্রুজল ঝরে,
না পেলে আজ এই পানীয় ফুটত না ফুল বন ভরে ।
চোখ জুড়াল আমার যেমন আজ এ ফোটা ফুলগুলি,
মোর কবরে ফুটবে যে ফুল__কে জানে হায় কার তরে!
(কাব্যগ্রন্থঃ রুবাইয়াৎ-ই-ওমর খৈয়াম, ফেব্রুয়ারী ২০১০, প্রকাশকঃ বিশ্ব সাহিত্য )