চল-চঞ্চল বাণীর দুলাল এসেছিল পথ ভুলে,
  ওগো এই গঙ্গার কূলে।
দিশাহারা মাতা দিশা পেয়ে তাই নিয়ে গেছে কোলে তুলে
  ওগো এই গঙ্গার কূলে।।
   চপল চারণ বেণু-বীণে তা’র
   সুর বেঁধে শুধু দিল ঝঙ্কার,
   শেষ গান গাওয়া হ’ল না ক’ আর,
    উঠিল চিত্ত দুলে,
   তারি ডাক-নাম ধ’রে ডাকিল কে যেন অস্ত-তোরণ-মূলে,
   ওগো এই গঙ্গার কূলে।।

   ওরে এ ঝোড়ো হাওয়ায় কারে ডেকে যায় এ কোন সর্বনাশী
    বিষাণ কবির গুমরি’ উঠিল, বেসুরো বাজিল বাঁশী।
     আঁখির সলিলে ঝলসানো আঁখি
     কূলে কূলে ভ’রে ওঠে থাকি’ থাকি’,
     মনে পড়ে কবে আহত এ-পাখী
      মৃত্যু-আফিম-ফুলে,
     কোন ঝড়-বাদলের এমনি নিশীথে প’ড়েছিল ঘুমে ঢুলে।
   ওগো এই গঙ্গার কুলে।।

   তার ঘরের বাঁধন সহিল না সে যে চির বন্ধন-হারা,
   তাই ছন্দ-পাগলে কোলে নিয়ে দোলে জননী মুক্তধারা!
   ও সে আলো দিয়ে গেল আপনারে দহি’,
    অমৃত বিলালো বিষ-জ্বালা সহি’,
    শেষে শান্তি মাগিল ব্যথা-বিদ্রোহী
      চিতার অগ্নি-শূলে!
   পুনঃ নব-বীনা-করে আসিবে বলিয়া এই শ্যাম তরুমূলে
   ওগো এই গঙ্গার কূলে।।

কাব্যগ্রন্থঃ-ফণি-মনসা