১৫/০১/১৬ ইং দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকায় প্রকাশিত। পরের এবং শেষ অংশ।
কিন্তু কবিতা সরাসরি স্টেটমেন্ট হলে সেটা আর কবিতা থাকে না। অস্তিত্বের প্রশ্নে একটি জটিল বিশ্রামহীন এবং অস্পষ্টতা অথবা ইংগিতবাহী যাত্রা যেটি কবিতাকে কবিতা বলে স্বীকার করে এবং সেক্সটনের কবিতায় প্রথম থেকে শেষ পর্যন্তু এই বিষয় গুলোই ঘুরপাক খায়।
শেষ স্তবকে দ্বিপ্রান্তিক শব্দ রিফিউজি সম্পর্কে একটি প্রশ্ন থেকেই যায়। অপরপক্ষে স্যাক্সটন স্বীকার করেন যে শেষ লাইনে যে ক্রিয়াপদ রয়েছে যেটি শীতলতা নাকচ করে এবং উষ্ণ দ্বান্দার্থ আহবান করে। উপরন্তু বক্তার প্রত্যাখ্যান জনিত প্রতিরূপ রয়েছে। সেখানে জীবিত এবং মৃত, পিতামাতা এবং শিশু প্রত্যেকেই (রূপকভাবে /পরিস্থিতি অনুযায়ী) অংশগ্রহণ করে।
In another country people die এ বক্তা ঘোষনা করেন যে এটি হলো হেমলেটের মৃত্যুধ্বনির প্রতিরূপ যেমন – অনাবিষ্কৃত দেশ যে সীমানা থেকে কোনো যাত্রীই ফেরে না। এমনকি যদি হেমলেট অশরীরি প্রেতাত্মা দ্বারা আচ্ছন্ন থাকেন স্যাক্সটন দেখেন বিচ্ছেদ সেখানে এবসিলিউট নয়। দুটো দেশ মনস্তাত্বিক সমুদ্র ( Hamlets’s stony troubles , Sexton’s stony waters) দ্বারা সন্নিবিষ্ট এবং সুদৃঢ় থাকে এবং এই বন্ধন বংশপরম্পরা এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম পর্যন্ত অটুট থাকবে।
স্যাক্সটনের মা বাবা তাদের মৃত্যুর পরে কন্যার উপর কল্পনাশক্তিহীনভাবে বিচরণ করেন নি। Stone boat returns” এমন যে স্যাক্সটন সব মায়াজাল ছিন্ন করে বের হবার চেষটা করেছেন। যেমন হেমলে কল্পনা করেন তারা তাঁদের সময়কে অতিক্রম করেন। অথবা হতে পারে তারা তাঁর নিজের মৃত্যুর জন্য অগ্রদুত অথবা গুপ্তচর হয়ে তার নিকটে আসে। অন্যদিকে সত্যি হলো তিনি আমাদের শেখাতে চান এবং কি শিখতে চান সে ব্যপারে দুরুহতা দূর করা প্রয়োজন। The truth the dead know “একটি নিরন্তর রচনাশৈলী অথবা বাগবিন্যাস এর মূলসুর এতই প্রাচীন যে মা-বাবা, শিশু এবং হেডনোটের কিঞ্চিৎ পরিবর্তন করে বলা যায় যে একজন কল্পিত বক্তার নামহীন বা কাল্পনিক নির্মাণ। যদিও স্যাক্সটন বর্তমানের প্রতিটি সময়ের বা মূহুর্তের মূল্যায়ন করেন অথবা চর্চা করেন যে মনে হতে পারে এটি তার নিজের জীবনের টুকরো অংশ। হেমলে অনুভব করেন এটি হতে পারে আমাদের অনুভুতির তীব্রতর প্রকাশ। আবার একই সাথে আমাদের নিজেদের বায়োগ্রাফিক্যাল ফ্যাক্টরসগুলো কবিতার মধ্যে অনুভব করা।
১৯৫৯ সালে স্যাক্সটনের মা বাবা মারা যান। রবার্ট লোয়েল কনফেশনাল কবিতার বিষয়ে একটি প্রকাশনা সেই বছরই প্রকাশ করেন। ১৯৫০ থেকে ৬০ এর দিকে কনফেশনাল কবিতার আবির্ভাব। ব্যক্তিগত দুঃখবেদনা, সুসাইড টেন্ডেন্সি, হতাশা এবং অন্তর্গত দুঃখবোধ কবিতা হয়ে উঠতে পারে কনফেশনাল কবিতার দিক অনেকটা এইরকম। যেখানে টি এস এলিয়ট্ /মিল্টন প্রমুখ শুধু মাত্র ইমোশন এবং রোমান্টিক বিষয়ের বাইরে অন্য কিছু কবিতায় অন্তর্ভুক্ত করতে চান নি সেখানে সিলভিয়া প্লাথ, স্যাক্সটন, রবার্ট লয়েল কবিতার ক্ষেত্রে একটি নতুন দিক নির্দেশনা দেন। এই সময় স্যাক্সটনের সাথে সিলভিয়া প্লাথ নামের এক অসাধারণ মেধাবী তরুণী কবির পরিচয় হয়। রবার্ট লয়েলের ওয়ার্কশপে দুই বিখ্যাত কিংবদন্তীর আলাপ কবিতার জগতে একটি অভুতপূর্ব ঘটনা।সিলভিয়া প্লাথ এবং স্যাক্সটন সেদিন কবিতায় হতাশা দুঃখবাদ, বিশ্রুত ভবিষ্যত এবং আত্মহত্যার যে প্রবণতা এসব বিষয় নিয়ে দুজন প্রচুর কথা বললেন।
দুই বিখ্যাত কবির এই সাক্ষাৎকার কার যদিও একটি বিশেষ ঘটনা তথাপি তাদের সব আলোচনাই ব্যর্থ হলো। প্লাথ তাঁর ডায়েরিতে সেই ঘটনা লিপিবদ্ধ করেন। স্যাক্সটন যখন তাঁর প্রথম কবিতার বই এর ব্যপারে সমস্ত আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন এবং তাঁর ইপ্সিত ম্যাকলিন স্কলারশিপের জন্য আবেদন করেন তখন সিলভিয়া প্লাথ এবং রবার্ট লয়েল দুজনেই একই মানসিক হাসপাতালে ছিলেন। (১৯৬৮-৬৯ সালে তিনি কবিতার একটি সেমিনারে বক্তব্য রাখেন যেখানে ১৯৭৩ সালে নিজেকে এডমিট করেন।) যদিও তিনি প্লাথের ব্যপারে একটু উন্নাসিকতা দেখিয়েছেন তথাপি সিল্ভিয়া প্লাথের মৃত্যুতে তিনি বেশ শোকাভিভুত হয়েছেন।
… and I know at the news of your death,
a terrible দুরূহ taste উপলদ্ধি for it, like salt.
(And me,
me too.
And now, Sylvia,
you again
with death again,
that ride home
with our boy.)
এবং আমার কাছেও
এখন সিলভিয়া
তুমি পুনরায় এবং পুনরায় আসো মৃত্যুর সাথে
যেন বাড়ি যাওয়ার মত
আমাদের সন্তানের সাথে -
Truth the Dead Know” স্যাক্সটনের কবিতার সাথে প্লাথের The Colossus, এর অনেকটাই মিল রয়েছে। তাছাড়া প্লাথের প্রথম কালেকশন এর অন্য একটি এলিজি যেটি ১৯৬০ সালে প্রকাশিত হয় সেটি ছিল তার বাবা মায়ের অন্ত্যষ্টিক্রিয়ার উদ্দেশ্যে লেখা। এটি ছিলো এক বাবা মায়ের জন্য মেয়ের লেখা এলিজি। The Colossus এ প্লাথ মানবমূর্তির একটি ধবংসাবশেষের পরে তার বাবার সাথে পুনরায় মিলিত হবার যে অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন সেটি অনেকটা নিষ্ফল হয় এবং এই যে ল্যান্ডস্কেপ তার অনেকটাই আদিম এবং তিমিরাচ্ছন্ন। বাগবিন্যাস প্রণালী বিস্ত্রৃত ভাবে বিভিন্ন রকম (pig-grunt, acanthine, Lysol) কিছুটা নাটকীয় অথবা অতিনাটকীয় হাস্যরস পূর্ণ। বক্তা বনিয়াদী অথবা তুচ্ছ অথবা অকার্যকর। সমালোচক মার্গারেট ডিকির বয়ানে “একটি চিরাচরিত নারী হৃদয় যিনি নিজেকে দাড় করাতে চান আবার তিনি নিজেই হতাশায় নিমগ্ন হন।
এবং তার কর্তব্যকর্ম থেকে তিনি বিচ্যুত হন। দন্ডপ্রাপ্ত আসামীর মত সন্তানের যাবতীয় দায়িত্ব পালন করা স্বত্তেও তার পিতামাতা তাকে পরিত্যাগ করেন।
Colossus প্লাথের প্রথম মাস্টারপিস। এবং যদিও স্যাক্সটনের কাব্য তার দু বছর পরেই প্রকাশিত হয় তবে একই থিম অনেকটা প্লাথের ভাবনা এবং আংগিকের সাথে মিল আছে। মিথিক কোনো আত্মশ্লাঘা নয় অযথা বাক্যালাপ নয়। কিন্তু বক্তা এখানে বিখ্যাত। যেন স্যাক্সটন অনুগত নন কিন্তু আনুগত্যহীন কন্যা। ট্রাজিক কাহিনীর ট্র্যাজিক কোনো কাহিনীর নায়িকা নন অথচ পর্যুদস্ত মানবাত্মা। প্লাথের কবিতায় তার পিতা অনেকটা ইতিবাচক এবং রহস্যময় সেদিন থেকে স্যাক্সটনের পিতা যেন তার কন্যাকে শাস্তি দেন এবং কন্যার প্রতি আশির্বাদ টুকুও নেই।
Truth the Dead Know” লেখা হয় Colossus এর পরে। তবু এটি প্লাথের লেখার চাইতে অপরিপক্ক। কিউমেনের মতে কবিতাটি পরিপূর্ন ফর্মে পৌছানোর পূর্বে বহুবার সংশোধন হয়েছে। আবার অনেকে একে আড়ম্বর পূ্র্ণ একটি কক্ষ হিসেবে বিবেচনা করেন। আরেকটি অপ্রকাশিত প্রকাশনা সেটি অনেকবেশী এভেইলেবল এবং loose brows এবং a blushing hermit in the sun”; এটা শেষ হয় প্রচলিত carpe diem noteএর মাধ্যমে এবং সেখানে বার বার বলা হয় “live now, live now. এই ধরনের মুক্তির আনন্দ অনেকটা ঐশ্বরিক হয়ে দাঁড়ায় যখন এর সমাপ্তির কাজটা হয় অনেকটা স্টাইলিষ্ট রচনাশৈলীর মাধ্যমে। বলা যায় স্যাক্সটন কবিতাটিকে হৃদয় দিয়ে দাঁড় করান। আবার অনেক সময় মনে হয় তার শিনার হাড় থেকে এই কবিতার জন্ম।
এই কন্টেস্টে প্লাথের Daddy একক একটি শক্তি নিয়ে প্রবেশ করে। (যদিও স্যাক্সটন তার পিতাকে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সময় পরিত্যাগ করেন সে ক্ষেত্রে
প্লাথ তার পিতাকে অকুলীন বলে অসম্মান করেন )।একই ভাবে স্যাক্সটনের the baroque morbidity কবিতাটি প্লাথের কবিতার কিঞ্চিৎ অনুরণন। যদিও দুজন কবিই কনফেশনালিজমকে এক্সট্রিম হিসেবে নিয়েছিলেন তবে Truth the Dead Know” খুব যে নিরংকুশ প্রশংসা অর্জন করেছে তা কিন্তু নয়।
উভয়দিক থেকে এটি সমালোচিত হয়েছে। যেমন বিষয়বিমুখ, নির্বিকার, অনেকটা কথ্যা ভাষার মত বর্ণনার ফলে এর সাবলীলতা হারায়।
আবার ক্ল্যাসিকেল দিক থেকেও নিয়ন্ত্রিত। ডিকনসনের I heard a Fly buzz” এবং ফিলিপ লারকিন্স এর Aubade মৃত্যু বিষয়ক কবিতা। ব্যক্তিগত বিবরণের ক্ষেত্রে এসব কনফেশনালিজম শুধুমাত্র প্রতিভাস করে না, নৈর্বক্তিক সত্যকেও স্বীকৃতি দেয়।