হাজার পথ পাড়ি দিয়ে, অবশেষে, জীবনের শেষ প্রান্তে পৌঁছে,
হাতড়ে খুঁজে মরি আমি,
আমাকেই খুঁজে ফিরি, নিজের অস্তিত্ব, আমার আমিত্ব
না, নেই কিছু নেই, রিক্ত, শূন্য, পরিশেষে নিঃস্ব-
জীবন, যৌবন, অহমিকা, সমস্তই আজ ধ্বংস।
মিথ্যা, ছলা-কলা, কূট-কৌশল, সম্পদের পাহাড়
গরিমা, লোভ, আহা! কত কিছু ছিল যে আমার
কত হকদার, কতজনের আবদার,
অশ্রুজলে মেশা কত অভিসম্পাত,
অভিযোগ, অভিমান, নিরব চপেটাঘাত,
সব সয়ে আমি গড়েছিলাম আমার রাজ্য-প্রাসাদ।
হায়! কি ভুলের মাঝে ছিলেম আমি, ক্ষুদ্র জ্ঞানের অন্তর্জালে
নিঃশেষে সব মিলিয়ে যেতেই, চৈতন্য ফিরেছে, টনক নড়েছে, ভুল ভেঙেছে এক নিমেষে
দেখি আমারই সব অহমিকা মিশিয়ে গেছে ধুলোর পড়ে,
তাই নিয়ে লুটোপুটি চলছে আমারই সব অন্বয় মাঝে।
আমার আমিই, হারিয়েছি সব, কূপমন্ডুকতার আঁধারে
কিছুই নাই, নিঃস্ব আমি, রিক্ত হস্তে চলছি দূরে - বহুদূরে।
অব্যয় মাঝে সব্যয় হয়ে সত্য পথে চলরে আজ
ধুম্রজাল কেটে গিয়ে ঠিকরে পড়ুক উজ্জ্বল তাজ,
নব গাহনে, নব বাহনে, নব সাজে সজ্জিত হোক চারিধার
শুভ্র আলোয় কাটুক অমানিশা, দূর হোক আঁধার।
ক্ষুদ্র জ্ঞানের অন্তর্জাল ছেড়ে, কূপমন্ডুকতার দেয়াল ভেঙে
হিংসা-বিদ্বেষ, লোভ, মিথ্যা অহমের গরিমা দূরে
শঠতা-কপটতা আর ভুলের লেবাস ত্যাগে
ঝলকে- পলকে, চকিতে, নব উদ্যমে গাহিয়া উঠরে গান
শান্তির বার্তা পৌঁছে যাক, মুক্তি পাক তৃষিত, বুভুক্ষু প্রাণ।
দেখ রে তুই চক্ষু মেলিয়া, মেলবি কি আর?
চোখের উপর ঠুলি পড়া, ওরে, টেনে যে তুই সরা
আপনার আলোয় উদ্ভাসিত হোক তোর আপন ধরা।