| একদিন তুমি |
একদিন ফুলের বনে-
ঘাসের গালিচায় তুমি পা রাখতেই
ফুলেরা হাসলো, ফুলেরা গাইলো,
ফুলেরা লুটালো সব তোমার চরণ ছুঁতে।
এক গুচ্ছ গন্ধরাজ যেদিন বুকে চেপে ধরলে
সেদিন থেকে হৃদয়ে তোমার গন্ধরাজ ফোঁটে।
একদিন ভরা পূর্ণিমায়-
আকাশ পানে তাকিয়েছিলে তুমি।
প্রসারিত হাত, পরিতৃপ্ত মুখ রাখলে আকাশের বুকে।
জোছনার ফোটা ফোটা সোনা রঙ সেদিন
অঝোর ধারায় ঝড়েছে তোমার গায়ে।
হিজলের তলে অন্ধকার ডুবেছিলো
জোনাকির মিটিমিটি আলোয়।
সেদিন থেকে তোমার উঠোন জুড়ে
জোছনার নিত্য মেলা বসে।
একদিন শারদবেলায়-
নদীর নীল জল ছুঁয়ে গিয়েছিলে
শুভ্র কাশের বনে।
প্রবল উচ্ছ্বাসে খেলেছো মাতাল,
ছুটেছো দিগ্বিদিক বাঁধন ছিঁড়ে।
অবসন্ন দেহে লুটিয়ে পড়েছো সাঁঝে
সবুজ ঘাসের পরে।
পায়ের পাতায় ঠেউ চুমে গেছে
ঘুম পাড়ানি গানে।
শিয়রে তোমার শিথান সেজেছে
সফেদ কাশের ফুলে।
সেদিন থেকে স্বপ্ন তোমার
মুক্ত হাওয়ায় উড়ে।
একদিন ভালো লাগায়-
আমার স্বরূপ ছায়ায় ডুব দিয়েছিলে তুমি।
চোখ রেখেছিলে নিঃশব্দে, নক্ষত্রের মাঝে।
আমাদের চোখাচোখি তারপর।
অজস্র রাত কথার ফুলঝুরি, খুনসুটি।
তোমার চোখের গহীনে ছিলো
সহস্র বছরের অনুপম প্রেমগাঁথা।
পাতায় পাতায় আমরা মিহি শব্দে বুনেছি
ভালোবাসার নকশিকাঁথা।
সেদিন থেকে হৃদয়ে তোমার
তৃণ হয়েছে তরু,
আকাশ হলো সামিয়ানা।
সেদিন থেকেই উদ্যমে উচ্ছ্বাসে
তটিনী'র মতো ছুটে চলেছি মিথুন,
জীবন বিগ্রহ চুকে, নিভৃত সঙ্গমে।