তোমাকে ছুঁতে চেয়ে
----------------------------
ছুঁয়ে দেবার সুতীব্র তৃষ্ণায় কাটাতে হলো সারাটা জীবন আমায় -
চাইলে ছুঁতে পারতাম ছাদের কার্নিশে জমে থাকা রোদের উত্তাপ
সকালে বারান্দায় পূবের দিকে ঝুঁকে থাকা গোলাপের গাছ
ছুঁতে পারতাম বর্ষায় বদলে যাওয়া উশৃঙ্খল নদীর বান
নতুন পানিতে স্বল্পায়ু মাছেদের ছন্দহীন নৃত্য।
চাঁদের আলোয় শিকারির বেঁধে রাখা এক ঘাই শশকের পেলব শরীর
ছুঁতে পারতাম পাহাড়ে অচেনা প্রাণীর পদচিহ্ন
কিংবা সদ্য উদ্ভিন্ন কোন লতার দেহের কারুকাজ।
আর আমি কিনা ছুঁতে চাইলাম গাছের পাতায়, আকাশের মেঘে
প্রিয় কবিতার শব্দের খেলায়, হঠাৎ শুনতে পাওয়া
মগজের কোষে কোষে ক্রমাগত ঝংকার তোলা গানের সুরে
চলতি পথে প্রখর রোদে দূরের মরীচিকায় দেখা তোমাকে!
একদিন দাম্ভিকের চোখে সমান সাহস রেখে বলেছিলাম-
পারলে নিয়ে যাও পুরোটা শহর, কিন্তু এই শহরের সব কৃষ্ণচূড়া আমার।
আমি চাইলে সব কৃষ্ণচূড়া নিয়ে হাজির হতে পারতাম তোমার আঙিনায়
তুমি হয়তো বিস্ময়কর হাসির রেখা টেনে তাকাতে, হয়তো তাকাতে না -
আমারতো কেবলি লোভ ছিল কৃষ্ণচূড়া দেবার ছলে তোমাকে ছোঁবার।
সেই স্মৃতির শহরে আমি বড্ড বেশি আগন্তুক, বড্ড বেমানান।
নগরায়নের লোলুপ কামনায় প্রিয় শহর এখন কৃষ্ণচূড়া শূন্য প্রায়
যা কিছু অবশিষ্ট তাও চলে গেছে নতুন প্রেমিকের দখলেই আজকাল।
এহসান নাজিম