কবি ভাবতেন জানালার কপাট খুলে সূর্য উঠার সময়
পৃথিবীর জেগে উঠা দেখতে দেখতে তার মৃত্যু হবে!
আজানের রেশ কাটতে না কাটতেই কবি শেষ বারের মতো
জানালার পাশে দাঁড়িয়ে শহরের ঘুম ভাঙা দেখবেন।
ল্যাম্পপোস্টের নিচে ছোট্ট টং ঘরটায় চায়ের সরঞ্জাম সাজিয়ে
জলিল মিয়া দড়ির মুখে চোখে জল এনে আগুন ধরাবেন,
আধো আলোতে ধূয়ার কুন্ডলিকে মনে হবে দিগন্ত রেখা -
যদিও কবি নিশ্চিত নন আর কত দূরে শেষের সীমানা।
রাস্তা ঝাড়ু দিতে আসা পরিছন্নতা কর্মীর নতুন গাওয়া গান
তোলপাড় করবে মগজে, অনুসরণ করবে ছায়ার মতো সর্বত্র।
ভাঙা রাস্তায় রিক্সার শব্দে ঘুম ভেঙে কোনো পাখি
উড়ে যাবে আরেকটু উঁচুতে, আরেকটু আলোর দিকে।
কবি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলবেন -
‘দ্রুত ফুরিয়ে আসছে সময়, সবকিছু রয়ে যাবে এমনি সুন্দর
শুধু দেখা হবে না আর চাঁদের আলোর মিশে যাওয়া সকালের রোদে’।
কবিতা লিখতে লিখতে কবি হয়তো ঢলে পড়বেন লেখার টেবিলে
কলমটা তখনো হাতের আঙুলে খেলছে
অপেক্ষায় জাদুকরী শব্দের, অচেনা স্বপ্নের।
ভোরের আলোর সাথেই ছড়িয়ে পড়বে কবির মহাপ্রস্থানের সংবাদ
সামাজিক মাধ্যম দখলে নেবে 'ওপারে ভালো থাকবেন কবি '!
শোকসভার পর কণ্ঠে কণ্ঠে ধ্বনিত হবে কবির কবিতা -
তারপর ধীরে ধীরে কবি বিহীন সময়ে অভ্যস্থ হবে শহর।
মানুষের জীবনে থাকে 'সমাপ্তি' চিহ্ন
কেবল অসমাপ্ত কবিতা থেকে যায় কবিতার খাতায়
কবিতার কোনো প্রস্থান নেই, চলে যাওয়া নেই
প্রতিটি কবিতাই কি তাই অসমাপ্ত কবিতা?
এহসান নাজিম
০৭/২৪/২০২৩