গোধূলিবেলায় এলোকেশিনী বধূ জ্বালিয়া সন্ধ্যাদীপ
অকারনেই অধীর বিরহে অস্থির কপোলে পরিনু টিপ,
দিনান্তে নয়ন দূর দিগন্তে চাহিয়া কাহারো পথ
অভিমানী ভাষাহীন আকুলতায় স্তব্ধ, ক্লান্ত মনোরথ,
আষাঢ়ক্ষণে সিক্ত কেয়ার সুভাস আপন করি
তাহার চরনে ভোরের সে ফুল নীরবে যায় যে ঝরি,
আঁখিজল ছুঁঁয়ে একাকী বেদন গড়ায়ে পড়ে ধীরে
শিয়রে রাখা প্রিয় ছবিখানা দেখে লয় ফিরে ফিরে,
                            কেন এত অভিমান হয়-
   উন্মাদ স্বপ্নে বিভোর চিত্ত নির্ঘুম জেগে রয়?

শ্রাবণ মেঘে বাদল ঝড়ে গহীন গভীর রাতি
নির্ঘুম ক্ষণ কাহারে স্মরিছে নিভায়ে ঘরের বাতি,
গগন সীমায় বেদন ছায়া অন্ধ কৃষ্ণ মেঘে
কাজল কালো অশ্রুমতী বধূর দু'চোখ জেগে,
বাদল ছাওয়া গগন তলে উদাসীন হাওয়া বয়ে
তাহার কেশের সুরভী লুটিছে অসহ রোদন লয়ে,
হেরিছে শ্রাবণ নিশীথে বারির মন্ত্রমুগ্ধ মায়া
কাহার স্মৃতি গভীরে আঁকিছে শীতল জলের ছায়া,
সেই জলেতে শিহরন জাগে তব প্রিয় নাম স্মরি
বক্ষ হানিয়া অভিমান ঝরে সকল শূন্য করি,
                             এইভাবে কতকাল-
ফুরাবে লগ্ন, কাটিবে রাতি বুনিয়া মায়ার জাল?

অশ্রুক্ষরা হাসির সাথে বয়ে যাওয়া চলার ছলে
বিস্বাদ আজি গানের সুর প্রলয় সলিল আঁখিজলে,
অন্তরেতে সুপ্ত অগ্নি, উগ্র ব্যথায় প্রাণের সুখ
গোপন পূজা যাহার তরে সে কি যাচিছে এই মুখ?
এলোমেলো বায়ু ঝমঝম বারি, আঁচল খসিয়া যায়
ধ্যানমগ্ন কোন সে ছবির সাড়া নাহি মিলে হায়!
মৃণাল কন্টক অন্তরেতে তীক্ষ্ণ বেদন লয়ে
ক্ষিপ্ত অসুখ চিত্ত মাঝে কাল যায় যে ক্ষয়ে,
শীত-জর্জর ভীষণ তিমির নিরাশাতে ভ্রান্ত রাত
প্রাণের তৃষা মিটাইবে বলে ধরিতে চাহে যাহার হাত,
                                    সে হানিয়াছে হেলা-
মৌন বিষাদ কুড়ায়ে কুড়ায়ে কত যে কাটিয়াছে বেলা।





একটা খাতায় পাওয়া আমার লেখা গত শ্রাবণের একটি কবিতা।আজ হঠাৎ খাতাটা পেয়ে গেলাম সেই সাথে কবিতাটাও।জানিনা কার কেমন লাগবে তবে আমার ভালই লেগেছে।