বহুদিন হলো সমান্তরাল পথে চলেছি,
তোমাতে মায়াবন্দী বৃত্ত আমার পায়ের তলায় সরলরেখা,
সে পথে বহুদিন হলো ছুটছি-
ছুটছি তো ছুটছি-ই- কোন শেষ নেই যেন।
কাঁকড়-পাথরে তপ্ত ধূলোর ছোঁয়ায় রক্তাক্ত পদক্ষেপ
অযথাই বয়ে চলেছি, বিষাদঘন রক্তের স্পন্দন।
চোখের সামনের ঘোর অন্ধকার কুয়াশাঘন মধ্যরাত,
এখন বিষন্নতার কালো আকাশ স্বাভাবিক লাগে
বিপুল প্রলয় এখন কিছুতেই স্পর্শ করে না-
মধ্যদুপুরের প্রখর রোদ্রে শরীর পুড়ে যায় না আর।
বহু বহু দিন ধরে সমান্তরাল পথে চলেছি-
মেঘ-মেদুর আকাশ ঘিরে আছে অনেক জোছনারাত,
তুমি তাকিয়ে দেখ না, দেখ্তে চাওনা বলেই
আমার কাজল চোখে অসীম পরাজয়ের গ্লানি,
শীতের দুপুরে আমার পৌষের ধূলোয় রোদ লাগেনা
জানালা বেয়ে আকাশ নামেনা মধ্যরাতের মায়াবী আঁধারে।
একদিন অসীম সুখের যন্ত্রনা নিয়ে তোমায় স্পর্শ করেছিলাম
সসীম পাওয়ার আনন্দে পরিপূর্ণ প্রতীক্ষায়,
তারপর অনেকদিন হলো সমান্তরাল হয়ে গেছে চলার পথ,
তোমাতে মায়াবন্দী বৃত্তে আটকা পড়েছে হৃদয়।
এখন অসাড় অনুভূতিতে অর্থহীন পৃথিবীজুড়ে
বৃত্ত হয়েছে সরলরেখা, ক্লান্তিকর এক সমভূমি,
তাই বহুদিন হলো সমান্তরাল পথে চলেছি।
বহুকাল ধরে বরফের উপর দিয়ে হাঁটছি
কখনো কখনো রৌদ্রদগ্ধ উত্তপ্ত বালুকাময় প্রান্তরে,
নিঃস্ব হয়ে গেছি কারনে অকারনে, উড়ে-পুড়ে গেছে স্বপ্ন,
সঙ্গতিবিহীন সকাল দুপুর রাত আর বিস্বাদ বিভাজন-
চলেছে দিনের পর দিন।
তুমি কখনো শুনোনা, শুনতে চাওনা বলেই
আমার নূপুরে আর নিক্বন ধ্বনি ওঠেনা সময়- অসময়ে,
সহস্র চুড়ি ভাঙ্গেনা সুমধুর কন্ঠস্বরের আওয়াজে।
তোমার উপেক্ষার অপমান সযত্নে ধারন করেছি পাঁজরে
সস্নেহ প্রেমের অতল গভীরে ছুঁড়ে ফেলেছি বাস্তববোধ,
তারপর কল্পনাকে বাস্তব আর বাস্তবকে করেছি তোমাতে বিলীন
এখন আমি ভীষন এলোমেলো,
অসম্ভব অমনোযোগী জীবনপাঠে।