আচ্ছা, হঠাৎ কোনো একদিন অপ্রত্যাশিত ভাবে তোমার সাথে আমার দেখা হয়ে গেলো!
আমার মনে তোমায় একটি বার দেখতে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা যেন আমৃত্যু,
হয়তো তুমিও মনের মধ্যে লালন কর আমাকে একটি বার দেখার প্রেষণা,
আমারা যদিও দুজনেই জানি যে আমাদের হয়তো আর কখনো দেখা হবে না,
দুজনের পথদুটি ভিন্ন হয়ে গেছে,
তথাপি যদি কোনো দিন অপ্রত্যাশিত ভাবে আমাদের দেখা হয়ে যায়!  
আচ্ছা,  কি করবে সেদিন তুমি?
তুমি কি আমার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকবে?
নাকি একটু মুচকি হাঁসি হেঁসে আমার সাথে কথা বলার জন্য আমার দিকে এগিয়ে আসবে?
নাকি অচেনা-অজানা, আমাকে চেনোই না এমন ভান করে এড়িয়ে যাবে।
আচ্ছা আমাকে প্রথম বার দেখার পর কি তোমার চোখে জল আসবে?
নাকি তুচ্ছ মনে করে অবজ্ঞার হাঁসি হেসে মুখ-খানি ঘুরিয়ে নেবে?
আমার জন্য কি তোমার চোখে কখনো জল এসেছিল?
গভীর রাতে চাপা বুক কাঁপানো দীর্ঘশ্বাসে দু-এক ফোঁটা জল কি বালিশে গড়িয়ে পড়েছিলো তোমারো?  আমার মতো!  
একদিন শুনেছিলাম তুমি নাকি আমার জন্য কেঁদেছিলে!
জানি না সত্যি কিনা, আমি কখনো দেখি নি তোমায়!  আমার জন্য কাঁদতে।
ধরো, সত্যি সত্যি কোনো একদিন তোমার সাথে আমার দেখা হয়ে গেলো,
সেদিন দিন কি আবেগ জোড়ানো কণ্ঠে আমার সাথে কথা বলতে পারবে না তুমি ?  
নাকি,  তোমার সাথে আমার কিছুই হয় নি এমনটাই ভাব নিয়ে দুয়েকটা কথা বলে চলে যাবে।
মনে পড়ে তোমার তুমি একদিন বলেছিলে যে, ঈশ্বর যেন আমার সাথে তোমার একদিন দেখা করিয়ে দেয়,
আমি বলেছিলাম, দেখা হলে কি হবে?
বলেছিলে তুমি,  শক্ত করে বুকে জড়িয়ে ধরে নাকি তোমার মনে জমে থাকা সমস্ত কথা বলে দিবে আমায়!  
আসলেই কি তাই করবে তুমি?
নাকি দেখা হওয়ার পর না চেনার ভান করে কথা না বলেই চলে যাবে?  
তুমি ঈশ্বরকে বলেছিলে যে তিনি যেন দেখা করিয়ে দেন
অথচ, আমি হাজারটা বার তোমায় একটি বার দেখার জন্য মিনতি করলাম,
তুমি ব্যাস্ততার অজুহাত দিলে।
হ্যাঁ, আমি তোমায় অন্তত একটি বার দেখার জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি।  
হয়তো তোমার মতো শক্ত করে বুকে জড়িয়ে ধরে, মনে বরফের মতো জমাট বাঁধা কথা গুলো বলতে পারবো না।  
হয়তো তুমি কাছে না আসলে তোমার কাছে যাওয়ারও সাহস পাব না।
হয়তো তুমি আমার কাছে এসে সাবলীল ভাবে কথা বললেও আমার মুখে কথা বেরুবে না,
কিন্তু তোমায় একটি বার মন ভরে দেখবো আমি,
কাছে যেতে না পারলেও দূর থেকে দেখবো,
যতটা দূর থেকে দেখলে তুমি আমার চোখে গড়িয়ে পড়া পানি দেখতে পাবে না।
যদি কাছে এসে কথা বল, আর কিছু বলতে না পারলেও শুধু এটুকুই জিজ্ঞেস করবো
কেমন আছো তুমি?
তুমি চলে যাওয়ার সময় পিছন থেকে ডেকে বলবো
নয়নিকা,  ভালো থেকো তুমি।
আচ্ছা,  আমাদের কোথায় দেখা হতে পারে বল তো
রেল স্টেশনে,  জনাকীর্ণ বাসে, নাকি সেই মন্দিরে যেখানে আমি তোমার সাথে প্রথম যেতে চেয়েছিলাম কিন্তু যাওয়া হয় নি।  
নাকি কোনো হসপিটালে?  
আমি মুমূর্ষু অবস্থায় মৃত্যুর পথ যাত্রী হয়ে যখন কোনো হসপিটালে ভর্তি হবো,
তখন তুমি ডিউটি করতে এসে হঠাৎ আমায় দেখে চমকে যাবে!  
মনে পড়ে তোমার, তুমি একদিন বলেছিলে, আমি যদি কোনো দিন অসুস্থ হয়ে হসপিটালে থাকি, তখন তুমি আমার সেবা করবে,
আমি বলেছিলাম, তাহলে তুমি বুঝি চাও আমি অসুস্থ হই,  
বলেছিলে না,  তুমি তা চাও না।  
তুমি জানো,  এখন আমার কোনো একদিন এভাবে অসুস্থ হয়ে যেতে ইচ্ছে করে, যদি তোমার শুশ্রূষার সুযোগ পাই।  
এতেও কি কম তৃপ্তি!  
হয়তোবা আজীবন একটি বার দেখার প্রত্যাশা নিয়ে জীবনের অন্তিম সময়ে একটি বার দেখা পাবো।
স্টেথোস্কোপ দিয়ে যখন আমার হৃৎপিণ্ডের অস্তিত্ব জানতে চাইবে তুমি,  
তখন আমার হৃৎপিণ্ডের প্রতিটি শব্দ তোমার গা শিহরিত করে জানান দিবে যে, আমার শেষ ইচ্ছে টুকু পূর্ণ হলো।।
(০২-০২-২০২২)