আজ আমার জন্মদিন,
তবু মনে হয়, আমি যেন এক বিশাল সমুদ্র,
যার ঢেউগুলো গভীর রাতে একা কাঁদে,
কেউ শোনে না, কেউ বোঝে না।

একটা সময় ছিল,
যখন জন্মদিন মানেই ছিল রঙিন বেলুন,
চোখভরা স্বপ্ন, মুখভরা হাসি,
কিন্তু আজ?
শুধু সময়ের স্রোতে বিলীন হয়ে যাওয়া স্মৃতির টুকরো,
যে টুকরোগুলো হাত বাড়ালেই ছড়িয়ে পড়ে—
ধরা যায় না, ফেরানো যায় না।

আজ আকাশটাও যেন একরকম,
গভীর নীল, নিঃসঙ্গ, নির্জন।
পাখিরা ডাকছে না,
বাতাসের মধ্যেও এক ধরনের ক্লান্তি।
ঠিক যেন আমার হৃদয়ের মতো—
শব্দহীন, অথচ বোঝা যায়,
কিছু একটা কাঁদছে ভেতরে।

বন্ধুরা?
তারা এখন ব্যস্ত,
জীবনের পথে ছুটে চলেছে,
তাদের সময় নেই,
আমার জন্য একটা মুহূর্তও নেই।
আমিও তো একসময় ছুটতাম,
ভেবেছিলাম, একদিন সবাইকে ছাড়িয়ে যাবো,
কিন্তু আজ বুঝি—
জীবন প্রতিযোগিতা নয়,
জীবন একটা নদী,
যার পাড় ধীরে ধীরে একা হয়ে যায়।

শুভেচ্ছার শব্দহীনতা যখন বুকের মধ্যে বাজে,
তখন মনে হয়,
আমিই হয়তো হারিয়ে গেছি কোথাও,
কেউ খেয়াল করেনি।
একদিন, হয়তো এই দিনটা আসবে,
কিন্তু তখন আমি থাকবো না,
তখন কেউ বলবে—
"তাকে তো মনে পড়ে,
কিন্তু সে তো এখন আর নেই!"

আজকের রাতটাও চলে যাবে,
সময়ের ঘূর্ণিতে হারিয়ে যাবে এই দিনটাও,
কিন্তু প্রশ্ন রয়ে যাবে—
জন্মদিন কি শুধু একটা সংখ্যা,
নাকি একটা কষ্টের নতুন অধ্যায়?

তবু,
এই গভীর রাতের আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে,
সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো আমার নীরব কান্না শুনে,
নিজেকেই বলি—
শুভ জন্মদিন!