তোমায় খুঁজতে গিয়েছিলাম
রেমার ফরেস্টে,
খুঁজতে খুঁজতে এক সময়
পথ হারিয়ে ফেলেছিলাম।
ভেবেছিলাম তুমি পথ বের করে দিবে
কিন্তু না, তুমি আসোনি।
সেইবার চিম্বুক পাহাড়ের
চূড়ায় উঠেছিলাম,
ভেবেছিলাম এতটা পথ যখন এসেছি
তোমায় ঠিক খুঁজে বের করবো।
কিন্তু না, সেখানে তুমি কেনো
তোমার পারফিউমের সেই
মাতাল করা ঘ্রাণও পাইনি।
একবার তো ঝোঁকের বসে
চলে গেলাম কাঞ্চনজঙ্ঘার জঙ্গলে,
প্রতিজ্ঞা করেছিলাম এবার তোমায়
খুঁজে বের করবোই।
কিন্তু না, সেখানে গাছের মরা পাতা ছিলো
তুমি ছিলে না।
তুমি কথা দিয়েছিলে তুমি থাকবে,
তারপরও তুমি বার বার কথা রাখনি।
সুন্দরবনে একবার নয়, দুই বার নয়
কয়েক হাজার বার গিয়েছি।
ঐখানের প্রত্যেকটি সুন্দরী গাছ
আমার পরিচিত।
কথা হয়েছে তাদের সাথে বহুবার
জিগ্যেস করেছি তোমার কথা,
কিন্তু কোন সদুত্তর পায়নি।
প্রতি বারই এক বুক কষ্ট নিয়ে
ফিরে এসেছি।
রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনানন্দ দাশ
কারো কবিতায় নেই তুমি।
শরৎ, সুনীল, সমরেশ
কারো উপন্যাসেও পাইনি তোমায়।
নিমাই দা অবশ্য একবার তোমার
ঠিকানা দিয়েছিলো,
খুব অনাগ্রহ নিয়ে গিয়েছিলাম
ভেবেই নিয়েছিলাম পাবো না,
সত্যিও হয়েছে তাই।
তোমাকে খুঁজতে কোথাও বাকি রাখিনি
নাগরাজ্যের পাতালপুরী থেকে শুরু করে
হিমালয়ের চূড়ায়,
এমনকি বোমারু বিমান ওড়া ঐ শঙ্কিত শহরে।
সত্যি কোথাও পায়নি, সত্যি পায়নি।
হটাৎ একদিন খুব ভোরে
একটি চিঠি আসলো।
তাতে কোন নাম ছিলো না
শুধু ঠিকানা, ৫৬/ন।
যেই হাতের লেখা ছিলো
তা দেখতেই বুঝতে পারলাম যে,
এটা তোমার চিঠি।
কারন এই হাতের লেখা
আমি হাজার বছর ধরে চিনি
ভুলে গেলে যে মারাত্মক অপরাধ হবে।
তুমি জানো আমি ভুলে যাই
কারনে-অকারণে ভুলে যাই,
কিন্তু ভোলা হয়নি কখনো তোমাকে।
চিঠিতে লিখা ছিলো শুধু একটি লাইন
"আমি আছি তোমার বুকের বা পাশের রুমটিতে,
আর কোথাও খুঁজতে হবে না হন্য হয়ে।
সত্যি সেদিন খুব কেঁদেছিলাম
কষ্টে নয় আনন্দে।
তোমায় খুঁজে পেয়েছি এই খুশিতে,
আরো কয়েকটা বছর বাঁচতে পারবো
এই আশ্বাস নিয়ে।