এমন একটা কবিতা লেখা হোক–
যেখানে স্পষ্ট হবে ধান শিশুর সাথে
কৃষকের রক্ত ঘাম করার বেদাগ ছবি,
দিনমজুরের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের পরও
পুষ্টিহীন শিশুর বুক পাঁজরের ধুকপুক
অসহনীয় হয়ে ওঠে স্বয়ং বিধাতার চোখে!

এমন একটা কবিতা লেখা হোক–
যেখানে সস্তায় শ্রম বিক্রি হয় কিলো দরে,
শিশু শ্রমিক কিভাবে মালিকের প্রহারে
ঘুপটি অন্ধকারে নিজেকে আড়াল করে;
অশিক্ষা, বেকারত্ব আর ক্ষুধার হাহাকার
কিভাবে হাতে বোমা আর পিস্তল হয়ে ওঠে!

এমন একটা কবিতা লেখা হোক–
যেখানে অশিক্ষিত নেতাদের  তাবেদারি তে
ব্যস্ত বুদ্ধিজীবী সমাজ আর একদল ধর্ম কেরানি,
থ্রি কোয়ার্টার পাউরুটির লোভে আস্ত একটা
নরমেধযজ্ঞ সমাপন করার দুর্বৃত্ত চিন্তার
কেবল পাট পচা ডোবার মত দুর্গন্ধ ছড়াবে!

এমন একটা কবিতা লেখা হোক–
যে কবিতায় সাদা কে সাদা বলতে ভয় পাবেনা
নির্দ্বিধায় কালোকে কালো বলার স্পর্ধা থাকবে।
রাজা তুই চোর– বলবে নিঃসংকোচে, নির্ভয়ে
ধর্ম গুরুর ভন্ডামি দেখাবে চোখে আঙুল দিয়ে,
রাজনীতির কারবারি কিভাবে লোক ঠকায়
পুরুষতান্ত্রিক সমাজ কতটা নারী বিদ্বেষী!

বেনিয়ার চক্রান্তে কিভাবে বিপন্ন পৃথিবী,
ধর্মের সাথে ধর্মের রেষারেষি, বর্বরতা
অকপট বলবে–এমন একটা কবিতা লেখা হোক!

এমন একটা কবিতা লেখা হোক
যেখানে ধর্ষক কিভাবে দেশের অন্ন খেয়ে
বেঁচে থাকে সংশোধনাগারে, সমাজে
একজন খুনি কিভাবে জনপ্রতিনিধি হয়,
কিভাবে টাকার বিনিময়ে চেয়ার বিক্রি হয়
পদমর্যাদা বিক্রি হয়, সম্মান বিক্রি হয়,
দিনমজুরের বউয়ের ঝি গিরি করতে যেয়ে
লাঞ্ছিত ধর্ষিত হয়েও কেন মুখ বুজে থাকতে হয়!

কিভাবে আদমশুমারির গণনায় ধর্মের শতাংশ
হিসাব লেখা হয়, ক্ষুধার হিসাবে আদ্যোপান্ত
গরমিল রেখে, ক্ষুধামুক্ত রাষ্ট্র ঘোষণা করা হয়!

এমন একটা কবিতা লেখা হোক–
নির্দোষকে আইনি শাস্তি দিয়ে প্রকৃত দোষীকে
আড়াল করা হয়, শিশু নাবালিকা ধর্ষণ করে
ধর্ষক কিভাবে চোখ এড়িয়ে নির্দোষ হয়ে যায়!
দেশের সোনার ছেলেদের রক্ত ঘাম করার
টাকা লুট করে খায় জোচ্চোর জনপ্রতিনিধি?

বেআইনি মজুতদার, অসাধু ব্যবসায়ী, মদত দাতা
এদের বিরুদ্ধে একটা কবিতা লেখা হোক!
শাণিত অস্ত্রের মত ঝলকে উঠুক বিনা গর্জনে,
কোতল করুক পরজীবী কুলাঙ্গারের কয়লা প্রাণ!

মানুষ সত্য বলতে শুরু করলে কেউ পরিত্রাণ পাবে না,
মানুষ ভয়কে জয় করলে হিটলার ও স্বয়ং বিনাশ হবে–
এমন একটা কবিতা লেখা হোক–
যাতে সত্যের সূর্য অমলিন হাসি ছড়াবে।।