আমার এই ছোট বাসা    সুখের জিনিসে ঠাসা
প্রাণ তবু পড়ে রয় দুরে,
মনের গোপন কোনে     কোন স্মৃতি আনমনে
উঁকি দেয় শুধু বারে বারে |

কৈশরের দিনগুলি     মনে পড়ে যায় খালি
সেই খেলা সেই হাসি গান,
মাঠ ঘাট তালসার    মনে পড়ে বার বার
আকুলে মুচড়ে উঠে প্রাণ |

ভোরে বা সকালবেলা    মাঠে গিয়ে বল খেলা
বিকেলের রোজ আড্ডায়,
চলতো কি কত কথা     ভুরি ভুরি বাজে বকা
সোনালী সে দিন আর নাই |

মায়ের হাতের পিঠে     কত স্বাদ কত মিঠে
দুপুরের ঘুমের বেলায়,
শুধু মাকে দিয়ে ফাঁকি     পালাতাম চুপি চুপি
উদগ্র খেলার নেশায় |

আশ্বিনের ভোরবেলা    রেডিওতে মহালয়া
শুনতাম একসাথে বসে,
শিউলি ফুলের ঘ্রাণ    ভরে যেত মন প্রাণ
কাটাতাম দিন মিলে মিশে |

লক্ষীপূজার রাতে     কোজাগরী একসাথে
ফুটফুটে চাঁদের আলোয়,
শীতের দুপুরে মাতি     পৌষের ডাঙ্গাভাতি
মাতামাতি কলার ভেলায় |

গরুর গাড়িতে চড়া     ছিপ হাতে মাছ ধরা
ধুলা মাটি নিয়ে কারবার,
ধুলা হত ভাত মুড়ি     শাক পাতা ঝুড়ি ঝুড়ি
ধুলাতেই পেতেছি সংসার |

কৈশরের চঞ্চলতা     কত মুখ কত ব্যথা
স্মৃতি পটে আজও অম্লান ,
শুধু ছিল যাওয়া আসা    ব্যর্থ প্রেম ভালোবাসা
ছোট ছোট মান অভিমান |

এখন বিলাসি ফ্ল্যাটে    একঘেয়ে দিন কাটে
মনে পড়ে সে দিনের কথা,
সব পেয়েছির দেশে     তবুও অধরা থাকে
কৈশরের সেই উচ্ছলতা ||