ননীগোপাল, তোমার সাথে প্রথম যেদিন দেখা
কলেজ ক্যান্টিনে উদাস মনে বসে ছিলে তুমি একা
না জানি কেন তোমার জন্য হলাম আমি উচাটন
প্রথম দেখায় দিলাম তোমায় আমার এ পোড়ামন
আলাপান্তে জানতে পারি
মফস্বলে তোমার বাড়ি
কলকাতাতে পড়তে এসে
আছো মানিকতলায় মেসে
তারপর ঘন ঘন শুরু হলো মুলাকাত
মিলেনিয়াম ভিক্টোরিয়া বিনিদ্র কত রাত
মেট্রো গ্লোব মির্নাভা সারকারিনা নন্দন
কফিহাউসে নির্জনে এক কাপে কফি পান
ভালবাসা, সেই তো প্রথম আমার জীবনে
হাবুডুবু খাচ্ছি তখন প্রেমের সাগরে
তোমার সাথে গেলাম তাই দীঘা ভ্রমণে
রিয়ার বাড়ি যাচ্ছি আমি মিথ্যা বলে ঘরে
সাগর কিনারে দিল ইয়ে পুকারে
তুম যো নেহি তো মেরা , কোই নেহি রে
সাগর কিনারে -----
সাগরের দামাল ঢেউএ নিসিক্ত স্বল্পবাসে ঘেরা দুটি অবাধ্য যৌবন
উথাল পাথাল করে মাতাল মন , ঘন ঘন হৃদস্পন্দন
নোনা জলে ভেজা দুটি ঠোঁট-এর প্রথম নিবিড় মিষ্টি চুম্বন
গরম নিঃশ্বাস -এর ঝলকানিতে আলিপ্ত সর্বাঙ্গে বিদ্যুতের শিহরণ
আতপ্ত দুটি দেহের গনগনে আঁচে মো মো করে বুনো ঘ্রান
নীল সাগরের কনকনে ঠাণ্ডা নিমেষেই ম্রিয়মান
মিলনপিয়াসি আত্মহারা যৌবনভরা দুটি প্রাণ
সমুদ্রে আগুন স্নান-এর এক মধুর আস্বাদন
সন্ধ্যায় সমুদ্র তটে বসি , বাহুবন্ধনে আবদ্ধ তুমি আমি পাশাপাশি
রুপোলি চাঁদ-এর স্নিগ্ধ আলোয় ঝকমকে ফেনিল জলরাশি
সমুদ্র সাক্ষী চাঁদ সাক্ষী শুকতারা সাক্ষী , সাক্ষী নক্ষত্ররাশি
জোয়ারের ঢেউ -এ ফিসফিসানি , ভালবাসি -ভালবাসি-ভালবাসি --
মাঘী পূর্ণিমার নিশুতি জ্যোৎস্না রাতে
তুমি আমি দু’জনে একসাথে
নিড়ালা গৃহকোণে বারবার
তনু-মনে মিলেমিশে একাকার
সুতোহীন দুটি উদ্দাম শরীরের প্রগাঢ় আলিঙ্গন
দেহের আনাচে কানাচে সহস্র বিছের অমৃত দংশণ
ক্ষনে ক্ষনে রোমাঞ্চিত পুলকিত শিহরিত তন-মন
স্বর্গীয় বেদনা সুখে আত্মহারা মন-প্রান
নিষুপ্ত রজনী ক্রমে রাত হতে ভোর
বেপরোয়া আদিম দুটি দেহ রভসে বিভোর
ফিরে এলাম দীঘা হতে প্রফুল্লচিত্তে
মন নাচে তাতা-থৈ তাতা-থৈ নিতি নৃত্যে
দিনকয়েক দেখা না হবার পরে
হঠাৎ করে সেদিন তুমি ডেকে
বললে আমায় মিষ্টি মিষ্টি করে
কোনকিছুর রাখ-ঢাক না রেখে
‘গভীরভাবে দেখলাম ভেবে মউ
তুমি মোটেও আমার যোগ্য নও
ঘটে গেছে যা কিছু সব স্বপ্ন ভেবে
আমায় তুমি ক্ষমা-ঘেন্না করে দেবে
আজ থেকে তাই তোমার আমার
সম্পর্ক কিছু রইল না আর ---‘
আমার মাথায় পড়লো যেন বাজ
নিঃস্ব আমি রিক্ত আমি শূন্য আমি আজ
অবাক বিস্ময়ে বলি আমি –
আগে বলো নি তো কই !
এতদিনে বুঝলে তুমি –
তোমার যোগ্য আমি নই !
বললে তুমি সরল ভাষায় ;
‘না মিশলে কেমনে বুঝি তুমি কেমন গুণী ‘
অশ্রু আমার দু’চোখ ভাসায়
নীরব হয়ে আমি তোমার কঠিন বাক্য শুনি
সজল নয়নে তাকিয়ে থাকি তোমার বিদায়ী পথে
জোর করে তোমায় তো আমি চাই না কখনও পেতে
জানি তাতে লাভের থেকে বেশী হয় যে লোকসান
তোমায় হয়তো পাব আমি, পাব না তোমার মন
তোমার পরে আরও ক’জন ভ্রমর কাছে এলো
ভালবাসার বেসাতি করে মধু খেল চলে গেলো
ননীগোপাল, আমারই দোষ, আমি কেন কালো !
আমি ভাল নেই তবুও তোমরা থেকো ভালো
ননীগোপাল, আমি তো একটা রক্তমাংসের মেয়ে
অবাক যেন হয়ো না আমায় নষ্ট পাড়ায় পেয়ে ---