দীর্ঘশ্বাসের শব্দ এসে মাতামহীর হিসেবখাতা থেকে আমার পথ আটকে দাঁড়ালো, কানপাশা খুলে রাখা আশ্লেষের চিহ্ন, বাজুবন্ধ খুলে রাখা দুপু্‌র সব লুট হয়ে গেল, ক্লান্ত তালপাখায় লেগে গেলো গলে যাওয়া সিঁদুরের দাগ। ভদ্রাসন কালনেমির লঙ্কাভাগের পরে, পানের বাটায় হাসির টুকরো পিছলে যেত এত উজ্জ্বলতা- সব স্নান সারতে সেই যে পুকুরঘাটে গেল, --- সমস্ত হৃদয়ের টুকরোগুলো যাঁতি দিয়ে সুপুরিকাটার মত কুচি কুচি করে কেটে এক ডুবসাঁতার দিয়ে পুষ্করিণীর নীচে প্রাণভোমরার বাক্সে জমিয়ে রেখেছে সেই হাপর টানার মত শ্বাসের শব্দগুলো। আমগাছের পেছনে সূর্যাস্ত, তিতার ডালের ফোড়নের সুগন্ধ, এরা সব কোনও বানান ভুলের পরোয়া না করে দৌড়ে গেল শব্দগুলির পিছুপিছু। পুকুরপাড়ে ষষ্টিপুতুল অমনি উল্টে পড়ে রইল, কে আর বাতাস দিয়ে বলে ‘ষাট, ষাট!’... বিড়ালছানার মত যেখানে মা রেখেছে, থেকেছি। প্রভাতে যদি কেশে কাঁকই না দাও, প্রদোষে জটিলতা বাড়ে, এ আর বিশেষ কি! সন্ধ্যায় সময় হল, ধুপ- ধুনায় যদি হয় বিষহরি বিদায়, সেই ঝাঁপিগুলি কোথায় রাখা আছে? যদি কিছু বিষ আরও থাকে বাকি, রেখে দাও, যদি ঢেকে রাখতে পারো সব শব্দ। পথ ছেড়ে দাঁড়ালেও সে শব্দগুলি ছিটকে গিয়ে লাগলো কিছু ঝুমকো-জবার পাপড়িতে, কিছু মিশে গিয়ে লেগে রইল বয়ামে রাখা নারকেল-নাড়ুর গায়ে, কিছু ‘যাও পাখী’ লেখা বাঁধানো সেই নকশি-কাঁথা শঙ্খলতার গায়ে। বৃষ্টি নামলে কি ধুয়ে যাবে সব শব্দ? কত, আরও কত বৃষ্টি প্রয়োজন সংক্রান্তি অবধি?