তিন ভাগ জল, এক ভাগ স্থল, কোথ্থাও নেই ঘর,
ছেড়ে মালিকানা, ফলায় ফসল, জমি শুধু উর্বর ।
আত্মার নেই পুরুষ বা নারী,
সুর খোঁজা রোগ এক মহামারী—
সুর- জমি- ঘর জয় করে নিতে কারা হল তৎপর?


জল যদি থাকে এক গণ্ডূষ, জয় করে কিবা পাবে ?
ধ্বংস- প্রলয় গ্রাসে যদি সুর, কে বাঁচে অসম্ভবে ?
অর্ধেক আকাশ ভেঙ্গে পড়ে যদি,
কোন সে আত্মা খুঁজে পায় বোধি ?
তবুও সখীরা বুনে ছিল বীজ মৃদু সুরে শৈশবে ।


উদারা মুদারা তারা সখী ছিল দাঁড়িয়ে সে দরোজায়,
ঘুম থেকে তুলে মাঝরাতে বলে, “জল আনতে চলো যাই”
“দেখেছি যে তোর ভাঁড়ার শূন্য,  
ভরে যেন হবো আমরা ধন্য ! ”
ধরে বেঁধে সব শেখাতে বসল একেকটি পর্যায় ।


ভোরের আগেই ভরে ওঠে শেষ স্বপ্নের পানপাত্র,
সুরের আঙ্গুলে মুহূর্ত থামে, সুখের পলক মাত্র ।
কি সে সুধারস ? কেমন সে স্বাদ ?  
পান করে কে যে হয় বরবাদ ।
খুঁজবে কি কেউ কোন মীড় ছুঁয়ে হৃদয় হয়েছে আর্দ্র ?


রাত শেষ হলে খিদে মিটে যাবে, রোদ্দুর দিল সায় ।
পায়ে পায়ে চলে পথের নাগাল ? তৃষ্ণা যে বড় দায় !
ভাগ করে নেবে যত বারিধারা ?
কথা দিয়েছিল কবে যেন কারা ।
নাই রস নাই, ধূ ধূ বালুচর, নদী হল ক্ষীণকায় ।


শেষ কোন সুরে মিশে যাবে এই মৃত্তিকা –আঘ্রাণ ?
কোন গণ্ডূষে মিটবে তৃষ্ণা ? মননে নামবে স্নান ?  
আসেনা বর্ষা এ মরুর দেশে,
অর্ধেক আকাশ ভারি একপেশে
নদী ভাগাভাগি শেষ আশা বাকি, সেই শুধু শেষ ত্রাণ ।


তবু আসে নদী দুকূল ছাপিয়ে পুরাতে দৈববাণী,
হৃদয় ভাঙছে কখন কোথায়, করেনি তো কোন হানি ।
ঘূর্ণিঝড়ের পিছু পিছু চলে,  
ফিরে আসে জল কার বাহুবলে,
নষ্ট ফসল, নেমেছে প্রলয়,  বৃথা সুর খোঁজা জানি ।


রাস্তা আগলে উদারা মুদারা তারা থাকে প্রহরায়,
তবুও ধ্বংস নদীতে, আকাশে, থেমে যায় যে ভোরাই ।
রাই জাগে না রে যমুনার বাঁকে,
ফিরবে না শ্যাম, কে বা লাজ রাখে !
চিরদিনই ছিল সঙ্গী আগুন, সবকিছু সে পোড়ায় ।


জ্বেলে দিই চিতা, পোড়ে স্ববিরোধ, দহনের কত সুখ !  
শব ছুঁয়ে রাত কাটায় কি ক্রোধ, নেভে কোন জ্বালামুখ ?
আগুন তুমি আমার মিতা
তুমি মাতা , তুমি পিতা --
অভিশাপে হোক এ বিশ্ব আজ অমেরুদণ্ডী শামুক ।


তিন ভাগ জল, এক ভাগ স্থল, কে যে করে ভাগাভাগি ?
অপার শান্তি প্রলয়ের শেষে,  ব্রহ্মাণ্ড কি ত্যাগী !
বাকি অর্ধেক আকাশ ভেঙেছে,
সুর –জমি- ঘর সব হল মিছে ।
উদারা মুদারা তারা সখী আয়,  নিজের জন্য জাগি ।