শ্রমিক সকিনা সুশীল সমাজের দর্পণ


ঘুটে কুরানি ভুলে গেছে আজকে শ্রমিক দিবস ১লা মে
জীবনে শ্রমিক দিবসের কতটুকু তাৎপর্য আছে জানে না
ও নিজেও এ সম্বন্ধে অজ্ঞ তাই অন্যান্য দিনের মতো -
সকিনা ঘুটে কুড়াতে মাঠে, ঘাটে, খামারে, কৃষকের বাড়িতে
সখিনা বিবির কপাল পুড়েছে সেই কবে,খবর রাখে কে?
গোবরের ঘুটে কুঁড়ে রোদে শুকিয়ে বাজারে বিক্রি করে
তার পরে পেটে দানা, এভাবেই চলছে জীবনের যাত্রা।

অভাবের সাথে বসবাস করে ঠিকই কোনো আক্ষেপ ,
অভিযোগ, অনুযোগ, হতাশা, কষ্ট তাকে ছুঁতে পারেনি।
এলাকায় প্রতি টি ঘরে এখনই আলোচনা চাই চাই চাই..
অনেকেই সকিনা কে দেখে হিংসা করে আবার বলে,
এই সকিনা সারাদিন ঘুটে কুড়ায় তারপরও দিনশেষে-
সন্ধ্যায় ভাত রাঁধে স্বামী পোলাপান ঘরে ফেরে আনন্দে।
মাটির ঘরে পাটি বিছিয়ে সানকি তে ভাত খায় সবাই মিলে
গ্রামে কোনো মানুষ বলতে পারে না সকিনার ঘরে ঝগড়া চলে।
নুন আনতে পান্তা ফুরায় তবুও এই ঘরে নেই অভাবের চিহ্ন,
সুখের আধার এইখানে থিতু, আছে সমন্বয়, সহমর্মিতা ধৈর্য।

হঠাৎ করেই সকিনার ডাক এসেছে, চেয়ারম্যান বাড়ি থেকে
মাথায় হাত, কিছু ঘটেছে কোনো ঘটনা, যা তার না জানা-
ভয়ে ভয়ে হাজির হয়, বাবু সাহেব কেন ডেকেছে মোরে!!
উজির সাহেব দেখেই বলে কি সকিনা,কপাল খুলেছে তোর
সরকার থেকে প্রতি বছর সম্বোধন করা হবে গুনী মানুষকে
এলাকার মানুষ  যোগ্য বলে তোর কথা বলেছে সবার আগে।

এবারে শ্রমিক দিবসে সরকারের সকল সুবিধা পাবে সকিনা
অভাবে থাকে, অভাবকে হাসি মুখে বরণ করে জীবন চলে,
ছন্দে ছন্দে, আনন্দে আনন্দে চাঁদের হাট সকিনার সংসারে।
এত কিছু দেখেও যারা গোমড়া মুখে থাকে, সৃষ্টিকর্তার দান
ভালোবাসার উপঢৌকন পৌঁছায় না স্বপ্নের সারথি হয়ে ?

০১/০৫/২০২৪
নন্দিনী লুইজা
উপদেষ্টা
জাতীয় সাহিত্য অধিদপ্তর বাস্তবায়ন পরিষদ