স্বাধিকারের নাম বিপ্লব,বাবা মার ফসলের নাম-"বিপ্লব"
জমিতে বীজ রোপণ করা হয়েছে,ফসল ফলবে
আবহাওয়া যদিও সুবিধার নয়, চলছে হানাহানি,
তবুও হোসেনের চোখে মুখে স্বাধীনতার স্বপ্ন প্রত্যাশা।
চারিদিকে স্বাধিকার আন্দোলনের ঝড় ফসলের উর্বরতা
ঘুম আসে না মিছিল মিটিং আর সমাবেশ,সকাল বিকাল
নিজের ভাষা,জমি আদায়ে তাতেও হানাদারদের হামলা।
রক্ষা পাবে আমার মাটি,আমার ভাষা,আমার স্বাধীনতা
কে ভাই তুমি পরগাছা, আন্দোলন করেই আদায় হবে
ভুলে যাইনি বায়ান্ন, ঊনসত্তর ,একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের
৬ দফার দাবি আদায় না মানলে অস্ত্র ধর, বীর বাঙালি
হোসেন নিজেও স্বাধিকার আদায়ের পক্ষে।
তাই তো ভাবনায় দিন কাটে, ঘরে আছে বাঁচার হাতিয়ার
সে ও তার ফুলবানু অস্ত্র চালাতে জানে অনেক আগে
শখের বশে কত কিছু করতে চায় দু'জনে,অবসর পেলে ।
তাই রাইফেল,ডেনামাইট, বন্দুকের গুলি, মাছ ধরার বরশি
সবই ছিল তাঁর ঘরে,এখবর রেখে ছিল পাড়ার দশী ছেলে।
চারিদিকে কার্ফিউ রাস্তা ঘাট জনপদ শূন্য, পুলিশ পাহারা
মাঝে মাঝে রাইফেল এর গুলির শব্দ, বুটের আওয়াজ
এঅবস্থায় হোসেন মিয়ার চিন্তার রেখা দেখা দেয় কপালে,
যে যার প্রাণ নিয়ে দৌড়ায়,চাচা আপন প্রাণ বাঁচা
যেতে পারে না হোসেন মিয়া খেতের দেখভাল করবে কারা।
দেশে যুদ্ধ বেঁধেছে, স্বাধীনতায় বাঁচতে চাই, ডাক দিয়েছে,
হোসেন মিয়ার ফসল বাঁচলে বিজয়ের নিশান উড়বে।
দুপুরে সূর্যের আলো,কাঁঠাল গাছে মুচি,আমের ডালে মোল
এর মাঝে একটি শিশু ভূমিষ্ঠ হয়, চিৎকার দিয়ে কান্না
এসেছে স্বাধীনতার ডাক, স্বাধিকার আদায়ে সোচ্চার ,
হোসেন মিয়ার ঘর আলোকিত, ফুল বানুর মুখে হাসি
একটি নবজাতকের জন্ম শ্যামল বাংলার মাটিতে ।
নয় মাসে অনেক বীর সন্তান জন্ম হয়েছে তারাই সৈনিক
তারা মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণা তারও যুদ্ধ করছে মাঠে ঘাটে
এমনকি শরনার্থী ক্যাম্পে এরাই বাংলার বীর সন্তান।
বাবা-মা আদর করে এদের নাম রেখেছে সময়ের ব্যবধানে
বিপ্লব,কমরেড, গ্রেনেড,রকেট,বিমান স্বাধীন,জয়,বিজয়
যথার্থ শিশুদের নাম, তারাই রাখবে বাংলা মায়ের নাম।
হোসেন মিয়ার ছেলে স্বাধীনতার সূচনা লগ্নে জন্মেছে
ইতিহাসকে সাক্ষী করে ৪ ঠা এপ্রিলকে স্বাগত জানিয়ে হোসেন ফুলবানুর জীবনের মুক্তি স্বাধিকারের নাম "বিপ্লব"
০৪/০৪/২০২৩
নন্দিনী লুইজা
শিক্ষক, কবি,গবেষক ও প্রকাশক
বর্ণ প্রকাশ লিমিটেড