তোমার আকাশে ঝরে রক্তের বৃষ্টি,
তোমার মাটিতে পুঁতে রাখা বিষবীজ।
নক্ষত্রের আলোও তো বিষাদের গল্প বলে,
আর সূর্যের তাপে পুড়ে যায়
অজস্র অঙ্গারের জীবন।
তুমি কে?
এক জনক, নাকি নির্দয় নায়ক,
যার সৃষ্টি শুধু অনন্ত দুঃখের শিকল?
তোমার অস্তিত্বের প্রতিটি বাঁক
হয়ে ওঠে প্রশ্নের অরণ্য।
কেন এত নীরবতা?
কেন এত নির্লিপ্ত চাহনি?
তোমার নামে উৎসব—
আলো, মঙ্গল প্রদীপ,
কিন্তু সেই আলোর নিচে
আড়ালে থাকে ছায়ার দংশন।
তোমার নামে মন্ত্রপাঠ—
তবু শব্দের রথে
পিছিয়ে পড়ে সত্যের ভাষা।
যখন শিশুর কান্না
ধরণীর বুক চিরে বয়ে যায়,
তোমার নির্লিপ্ত সুরে
শুধু নীরবতার ঝংকার।
যখন যুদ্ধের আগুন
জ্বালিয়ে দেয় সভ্যতার চিতা,
তুমি কি কোনো বাতাস হয়ে
সেই আগুনকে উস্কে দাও?
তুমি কি জানো না,
মানুষের বুকে জমা
অসীম হতাশার ভার?
নাকি তুমি সেই ভারেরই রূপ,
যা মুছে দেয় সমস্ত আশা?
তোমার সৃষ্টি কি খেলা?
যেখানে চক্রাকারে ঘুরে বেড়ায়
পাপ আর পুণ্যের প্রতারণা?
তুমি কি সত্যি জানো,
কেন পৃথিবী এত নির্জন?
নাকি এ কেবল এক নিষ্ঠুর রসিকতা,
যেখানে সবকিছুই শেষ হয় শূন্যতায়?
তোমার প্রান্তরে দাঁড়িয়ে
আমি শুধাই—
তোমার কি কোনো জবাব নেই?
নাকি নীরবতাই তোমার ভাষা,
যেখানে কান্নার প্রতিধ্বনি
জীবনের একমাত্র উত্তর?
তুমি যদি সত্যি থাকো,
তবে এসো, এই অন্ধকার ভেদ করো।
আর যদি না থাকো,
তবে মানুষের অস্তিত্ব থেকে
তোমার ছায়াকে মুছে ফেলা হবে।
তোমার কোনো প্রয়োজন নেই
যেখানে মানুষ নিজের শক্তিতে
গড়বে নতুন পৃথিবীর প্রতিচ্ছবি।