আমি অক্ষরকে ভয় পাইনা,
আমি শব্দকে ভয় পাই।
যে শব্দ মহাজগতের বিস্ফোরণ থেকে তৈরি
তা নয়,
যে শব্দ দিকহীন যত প্রতিশ্রুতির জন্মদেয়
আমি সেই শব্দকে ভয় করি।
যে শব্দ পারমাণবিক বোমা ফাটার কারনে তৈরি
তা নয়,
যে শব্দের মূল্যহীনতা সেকেন্ডের কাটার প্রবাহের গতি কে হার মানায়
সেই শব্দকে আমি ভয় করি।

আমি ভয় করি বাধ্য ছেলের প্রতিশ্রুতিকে,
ভয় করি ঘর ছাড়া যত অনাথ শিশুর কান্নার শব্দকে,
ভয় করি একমাত্র প্রেমিকের প্রতিশ্রুতিকে।

যদি বলি গঙ্গা  তোমার পবিত্রতা
শুধু ধর্মে,
যদি বলি হিমালয় তোমার আকাশ ছোঁয়া গল্প কথা শুধু কাব্যে,
যদি বলি তাজমহল তোমার সৌন্দর্য
শুধু দর্শনে,
তবে এ সভ্যতার বুকের উপর সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যে শব্দের প্রতিধ্বনি আমাকে শুনতে হবে তা আমাকে বোধহয় দিকহীন করে দেবে।

ভালোবাসা, প্রেম, প্রতিশ্রুতি,
বিশ্বাস - অবিশ্বাস,
যুদ্ধ - শান্তি,
বুলেট - উপহার  
এই শব্দ গুলোকে আমি ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছি।
এও আমার নতুন ভয় কিনা আমি জানিনা।

তবে এই টুকু বুঝি
সেদিন যে বৃদ্ধ মা টি ঘর ছাড়াতে
আজ দেশের কোনায় কোনায় বৃদ্ধাশ্রম,
যে শিশুটিকে রাজপথ থেকে উদ্ধার করায়
আজ দিকে দিকে অনাথ আশ্রম,
গত শতাব্দীর বিশ্বাস- অবিশ্বাসের কাটাকুটি খেলায় যত বোকা প্রেমিকেরা আজ নীরব হয়েছে,
গত দশকের একে একে সকল প্রতিশ্রুতি
বারেবারে ভেঙে টুকরো টুকরো হওয়ায়
আজ ভাষা হারিয়েছে
তার সব, সব কিছুর কারন শব্দ,
শব্দ শব্দ।

তাই অক্ষরকে ভয় না পেলেও,
আমি শব্দকে ভয় পাই,
শব্দকে।