বল জাগো!
বল উঠো, ভাঙো সব বাঁধ!
বাধা যত মুছে দাও আগুনের প্রলয়-স্রোতে।
আমি ঝড়,
আমি দুরন্ত স্রোতের উন্মাদনায়
তছনছ করি বন্দিশালার কঠিন প্রাচীর,
আমি বিদ্যুৎ, অন্ধকার বিদীর্ণ করি,
আমি দুর্বার বিপ্লবের অগ্নিশিখা।
আমি মাটির ছেলে,
আমি বাঁচি কুঁড়েঘরে,
কিন্তু স্বপ্ন দেখি অমর সিংহাসন ভাঙার।
আমি চাষার ছেলে,
কাস্তে হাতে শস্য কাটার সাথে
অন্যায়ের শিকড় উপড়ে ফেলি।
আমি হুঙ্কার!
আমি বজ্রনিনাদ!
আমি রক্তঝরা ভোরের প্রতিশ্রুতি!
আমি বুকে আগুন নিয়ে এগিয়ে চলি,
বিপ্লবের নিশান হাতে তুলে ধরি।
আমি একা নই—
আমার সাথে আছে লক্ষ মুখের ভাষা,
যারা স্বপ্ন দেখে নতুন দিনের,
যারা শপথ নেয় অন্ধকারের বিরুদ্ধে।
বল জাগো!
বল উঠো, ভাঙো সব বাঁধ!
বন্দিত্বের শৃঙ্খল ছিঁড়ে দাও,
নবজাগরণের সূর্যোদয়ের অপেক্ষায়।
বল ধ্বংস!
বল উন্মূলিত করো পাষাণ-প্রাচীর,
অশিবের শির নত করো মহাপ্রলয়ের তাণ্ডবে।
আমি অমিত তেজস্বী—
সংহারকালের শঙ্কাহীন দূত,
আমি অতলান্তিকের উত্তাল স্রোত,
ধ্বংসের প্রলয়নৃত্য রচনা করি।
আমি মহাকাল—
অশান্তির অসীমতায় বিভোর,
নির্বিচার ধ্বংসের দাবানল ছড়িয়ে দিই।
আমি শ্মশান-শান্ত শিবের ত্রিশূলধারী,
আমি দুর্নিবার বজ্রনিনাদ।
আমি চিরনির্মম!
আমি অগ্নিমূর্তি, ধ্বংসের বরাভয়,
আমি দিগন্ত বিদীর্ণকারী অগ্নিবাণ।
আমি বিজয়ীর অভ্যুদয়
অধর্মের বুকে শাণিত শিখা।
আমি কালের করালগ্রাস—
তিমিরাচ্ছন্ন সময়ের শাসক,
অবিচারের শিকড়ে অসীম পৈশাচিক ক্রোধ।
আমি মহাসংহার,
অন্যায়ের শিরচ্ছেদে অপ্রতিরোধ্য বিধ্বংসী শক্তি।
আমি প্রলয়ের অগ্নিতরঙ্গ—
নির্বিকার, নিঃসংশয়, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
অন্যায়ের মূলমূলে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ হয়ে জ্বলছি,
ধ্বংসের শিখা নিয়ে বিজয়ের সূর্যোদয় ঘোষণা করি।
আমি জ্বালামুখী আগ্নেয়গিরি—
শক্তির উন্মত্ত বিস্ফোরণ,
ধ্বংসের উল্লাসে তুফান তুলি।
আমি বিদ্যুতের দীপ্ত শিখা,
নির্মম প্রত্যাঘাতে অন্ধকার বিদীর্ণ করি।
আমি নবজাগরণের দূত,
নিষ্ঠুরতার প্রতিশোধে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
আমি সংকল্পের শিলা, অদম্য আত্মবিশ্বাস।
আমি অমৃতের সন্ধানে মৃত্যুর অমোঘ আহ্বান।
আমি রণভূমির বজ্রকণ্ঠ,
দুর্জয়ের অশান্ত তান্ডব নৃত্য।
আমি যুদ্ধের উন্মত্ত মাদল,
সংঘাতের সৃষ্টির সূচনা।
আমি শত বিজয়ীর পতাকাবাহী,
সম্ভ্রমহীন অতীতকে মুছে নবযুগের প্রবাহ তৈরি করি।
আমি সিংহাসন-বিধ্বংসী ঝঞ্ঝাবায়ু,
আমি রাজমুকুটের বিষাক্ত কাঁটা উপড়ে ফেলি।
আমি স্বৈরাচারের মূর্তি-ভাঙা হাতুড়ি,
শাসকের ঘৃণ্য আসন টেনে ফেলি অগ্নিস্রোতে।
বল ধ্বংস!
বল উন্মূলিত করো পাষাণ-প্রাচীর!
বিপ্লবের অগ্নিশিখা হয়ে ছড়িয়ে পড়ি
চিরমুক্তির দীপ্ত স্বপ্নে,
বিজয়ের নিশান উড়িয়ে দিই অমর প্রভাতে।