জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি
বলি দ্বিধাহীন আখ্যান -
ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে সব যদি হারিয়ে যায়,
আর
অত্যাচারীর খড়্গভয়ে সত্য ইতিহাস যদি মেনে নেয় হার,
তবুও হারাবে না কীর্তি তাঁর;
তিনি যে আছেন জনতার অন্তরে অন্তরে।

মুক্তির আগে কত অত্যাচার, কত জুলুম নির্যাতন সয়েছে এ দেশের মানুষ!
তিনি অবিবেচকভাবে আচমকা
দেননি বিপ্লবের ডাক,
বরং বুদ্ধিদীপ্ত সংগ্রামে ধীরে ধীরে কুড়ালেন মানুষের প্রীতি
আর এ জাতির চব্বিশ বছরের শোষণ বঞ্চনার টানলেন ইতি।

বাঙালি জন্মের পর থেকেই দেখেছে নিষ্ঠুর অত্যাচার,
বায়ান্ন, চুয়ান্ন, বাষট্টি, ছেষট্টি, ঊনসত্তর, সত্তর
এবং পুরো একাত্তরের বুক জুড়ে
দেখেছে লক্ষ মানুষের প্রাণের সংহার।
তিনি বুদ্ধিদীপ্ত সংগ্রামে একটু একটু করে আগালেন
সম্মোহনী নেতৃত্বে মানুষের মুক্তির কামনাকে করলেন প্রবল,
রচনা করলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের কৌশলী প্লট।

দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে
কেউ হারিয়েছে আপন পিতা-মাতা,
কেউ হারিয়েছে প্রাণপ্রিয় পুত্র-কন্যাকে,
কেউ ভাই, কেউ বোনকে হারিয়েছে
এবং লক্ষাধিক মা-বোন হারিয়েছে সম্ভ্রম।
চারিদিকে ছিল ধ্বংস আর মৃত্যুর বিভীষিকা
তবুও দমেনি বাংলা মায়ের সূর্য সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা।
এসব ছিল তাঁরই বাতলানো কৌশল।

এরপর একদিন চূড়ান্ত বিজয় এলো মহাসমারোহে,
ভগ্ন হৃদয়ে জাগলো বাঁধভাঙা আনন্দ,
মুক্তির আনন্দে আত্মহারা হলো সমস্ত বাংলা।
কিন্তু সে আনন্দ আর কতক্ষণ!
সকাল গড়িয়ে দুপুর, এরপর বিকেল;
ক্ষুধার জ্বালা আবার মানুষের মধ্যে প্রবল হতে থাকলো।

এতো সব গৃহহারা, খাদ্যহারা, সম্বলহারা মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি ছিল
তাঁর পরবর্তী কর্মসূচির প্রধান লক্ষ্য।
দেশে দেশে পাতলেন হাত,
দেশ জাতির কল্যাণে হাতে নিলেন ভিক্ষের থলি।
রচনা করলেন রাষ্ট্রের সংবিধান।
এভাবেই ধীরে ধীরে সাজাতে থাকলেন একটি দেশ,
স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।