বৃদ্ধাশ্রম
বাদশা মোহাম্মাদ নাজ্জাসী
খোকা আমায় একবার বাড়িতে নিবি রে,
বাড়ির কথা না বড্ড মনে পড়ে।
আমার দাদু ভাইটা কেমন আছে রে?
আমাকে কি ওর এখনো মনে পড়ে?
খোকা সেই যে রেখে গেলি আর তো খোজ নিলি না!
তবে কি আমার কথা তোর আর মনে পড়ে না,
জানিস, ছোট বেলায় তুই আমাকে ছাড়া ঘুমোতে পারতি না।
যাই হোক ওসব কথা থাক, তোরা কেমন আছিস,
দোয়া করি বাবা তোরা যেন হাজার বছর বাঁচিস।
মা,,, তো আমি মনে পড়ে খুব কি করব আর?
স্মৃতির খাতায় কলম ঘুরাই কি আছে আর করার?
মাঝে একবার খুকি এসেছিল বছর দুয়েক আগে।
বাছারা আমার, মায়ের জন্য তোদের কি একটুও খারাপ লাগে?
ভাবিস নে তোরা তোদের আমি কষ্ট দেব না আর,
এই বৃদ্ধাশ্রমেই সয়ে নেব যে কদিন বাঁচবার।
বলেছিলি পরের ঈদে নিবি আমায় বাড়ি,
নিতু বলেছিল ঈদে বাড়ি না গেলে করবে ভারি আড়ি।
বাচ্চা মেয়ে তো ও বোঝে না কিছু,
ওদের দিদার বয়স হয়েছে দামে হয়েছে নিচু।
একবার অবশ্য নিলেও পারিস বাড়িতে,
বৌমা না হয় আমার ভাত না তুললো হাড়িতে।
খেলাম না হয় দুদিন রেঁধে,
তোর জন্য মুড়কি ভেজে রাখতাম আচল খানায় বেঁধে।
তেমন কিছু না তোর বাবার ঘরে একটু যেতাম,
আর কিছু না হোক তোর বাবার গন্ধ তো একটু হলেও পেতাম।
বুঝলি খোকা শরীর টা না বড্ড বেশি খারাপ।
জানিস তো ট্যাবলেট খেতে পারি না,
ডাক্তার দিল এক গাঁদা ইঞ্জেকশন আর সিরাপ।
বুঝলি সব সময় একটা কথাই ভাবি!
সংসার তো ছেড়েছি বহু আগে,
বৃদ্ধাশ্রম এসেছি বৌমাকে দিয়ে চাবি।
মাঝে মাঝে একটু কল করিস,
যে কদিন আর অবহেলার মাঝে বাঁচি!
তোদের খবর জানাস আমায়,
নাই বা জানতে চাইলি আমি কেমন আছি?