সন্ধ্যায় অফিস থেকে ফিরছি ক্লান্ত হয়ে।
বসের বকাবকি , বোনাস নিয়ে বাড়াবাড়ি
রকমের কিপটামি। সবই সহ্য করি ।
যেহেতু গরিব ঘরে জন্মেছি।
"শপাত শপাত" হটাৎ
এ অদ্ভুত শব্দ কানে আসতেই পেছন ফিরি।
নির্জন নিরিবিলি গলি। দূরে বসা কুকুরটাও নেড়ি।
এর মাঝে যদি, এমন উদ্ভট শব্দ শুনি!
মনের ভুল মনে করে আবার হাঁটা ধরি।
দুপাশে বেশ কিছু বাড়ি।
ঈদে বেশির ভাগই গেছে ছুটি।
বিদ্যুৎ না থাকায়, পুরো আধার ঘেরা গলি।
হাঁটছি , হাঁটছি , হাঁটছি। আরে, ব্যাপার কি!
গলির রাস্তা শেষ হচ্ছে না দেখি।
সেই যে একটু দূরে থাকা মেইনরোডের বাতি।
দূরত্ব তো মনে হচ্ছে পুরোটাই বাকি।
এমন সময় আবার শুনি:  "সপাত সপাত"!
এবার আগের চেয়ে কাছে, আরেকটু জোরে। আমার ভয় লাগা শুরু করে। হরর মুভি দেখে শিখেছি, পেছনে তাকালেই দেখা যাবে
কিছু নেই, এরপর.. প্রশান্তির নিঃশ্বাস ফেলে
সামনে তাকালেই দেখা যাবে...
না! অন্ধকারে এদের নাম নিতে নেই ।
হাঁটার গতি বাড়িয়ে দিলাম ।
আর তখনই কানে আসে "এই দাঁড়াহ.."
তারপর একটু থেমে " মাছটা দিয়ে যাহ"।
উল্টো ঘুরে দেখি , ল্যাম্পপোস্টের নিচে যেখানে
নেড়ি কুকুরটা ছিল, ওখানে দাঁড়িয়ে আছে
একটি অবয়ব। অন্ধকারে মনে হচ্ছে
কালো মানব ছায়া। তবে আকারে বেশ বড়।

" মাছ তো তোর বাপের টাকায় কেনা, তাই না?
দাঁড়া হারামজাদা! মাছ খাওয়াইতেছি তোরে।"
এই বলে পরক্ষণে মাছটাকে উঁচু করে
তেড়ে যাই অশরীরীর দিকে।
কাপুরুষ  প্রেতটাও আমাকে এগিয়ে
যেতে দেখে ভয়ে পেছাতে থাকে।
যখন ল্যাম্প পোস্টে পৌঁছাই,
ওইটা তখন আর নেই, একেবারে উধাও।
হায়রে জীবন! গরিব হয়ে জন্মেছি,
তাই ভূতের সঙ্গেও লড়াই করি।
ভাবতেই বিজয়ী আমি, অট্টহাসিতে ফেটে পড়ি।

এলাকার দুষ্ট ছেলেপেলে কুকুরটার
লেজ কেটে দেয়ার পরও,
সবাই কুকুরটার নাম রেখেছে লেঞ্জু।
পশুপাখি বিপদ আগেভাগেই
আচ করতে পারে। এজন্যে যখন দেখে
মাতাল লোকটা মদের বোতল
উঁচু করে লেঞ্জুর দিকে এগিয়ে আসছে,
তখনই নিরাপদ দূরত্বে সরে যায় ও।
বিরক্তি নিয়ে চলে যাবার সময়
শুনতে পায় পেছনে থাকা লোকটা
হো হো হো হো করে হাসছে।
অন্ধকার রাতের অশরীরীর চেয়ে
মানুষের কাজকর্মকেই লেনজু বেশি ভয় করে!