ধুত ছাই !
কলমসহ ডায়েরি বন্ধ করে, সোফায় ছুড়ে ফেলে সিজান। নামটা পর্যন্ত পাল্টে ফেলেছে
অনলাইনে লেখতে গিয়ে।
'মিজান' থেকে 'সিজান' শুনলেই মনে হয় যেন : লেখক প্রগতিবান ।
তারপরও পাঠকের স্বল্পতা করে,
নিয়মিত নৈরাশ্য দান।
"আর জীবনে যদি কবিতা লিখছি! হ্যাঁ, আমারই ভুল হইছে! কি ভেবে লেখাটা শুরু করসি?
দাম আছে লেখার? নাম আছে নাকি আমার?
হুদাই গল্প লেখে খামোখা সময় নষ্ট!"
মনে মনে আবারও দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করে সিজান। এতবার লেখা লিখেছে সে পত্রিকার ইমেইলে,
এত পোস্ট করেছে অনলাইন ব্লগ ফেসবুক গ্রুপে, কোথাও কোন সাড়া নেই!
কেউ লাইক দিয়ে চলে যায়, কেউ সেটা দেয় না, বেশির ভাগই হয়তো : পড়েও দেখেনা।
সিজান মার্কেট বুঝেনা - 'রিলস এর আনন্দ ছেড়ে, কেন লেখা পড়বে লোকে'- প্রশ্নটা নিজেকে করে না। তাই সাময়িকী ইত্তেফাক, বিচ্ছু যুগান্তর কিংবা
অন্য আলো পত্রিকার মেইলে পাঠানো তার লেখা যখন কেউ ওপেন করেও দেখে না,
তখনও সে বোঝে না : কেন সে পাঠক পাবে না।
আজ ছয় মাস ধরে চেষ্টা পর বিরক্তি, নৈরাশ্যে- তার মন টইটুম্বুর। লেখার ডাইরি ছুড়ে ফেলে দিয়ে লেখালেখি ছাড়ার দৃঢ় অঙ্গীকার নিয়ে বাড়ি থেকে নামে গলিতে, ক্রিকেট খেলতে।
পরবর্তী সময়টা বেশ ভালো যায়।
বিকেলে বাড়ি ফিরে হাতমুখ ধুয়ে ,
নাস্তা হাতে ছাদে গিয়ে বসে।
হাতের সিংগারা খেতে খেতে চোখ যায়,
গাছের পাতায়, আধ ঢাকা দিগন্তে,
নীলিমায় লালিমা নামানো সূর্যাস্তে।
কোথা থেকে এক চড়ুই পাখি এসে সামনে,
গাছের ডালে বসে, ডেকে উঠে।
সিজান শুনতে পায় নিজেকে বলতে :
"পাখি ফিরে নীড়ে, সূর্যি নামে ধীরে
গগন ঢাকা লালে, স্বপন আঁকে নীলে ।"

প্রায় সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যায় নিচে,
প্রতিবারের মতো প্রতিজ্ঞা ভেঙে,
ফেলে আসা ডায়েরির খোঁজে,
যার পাতায় লেখায় অনুভূতি জমে
আর, আধ খাওয়া সিঙ্গারা টা পড়ে থাকে ছাদে।