শম্পার সাথে দেখা নেই অনেকদিন।
উঁ উঁ উঁ এক যুগ তো হবেই।
আমি একটা গবেট!
পাড়ার লোকেরা ই ওকে ভাল মত চিনত না আর আপনারা!
ও তো আর নিপুণ নয় যে বাসার সামনের চা ওয়ালা লালে লাল হয়ে যাবে।
ওর মত সাধারণ চেহারার মেয়েকে কে ই বা আর খেয়াল করে।
আমার বিষয়টা ভিন্ন।
আমার প্রতি আগ্রহ ই ওকে অন্যের থেকে আলাদা করেছিল।
আমরা তখন নিপুণের মাকে রিক্সা ডেকে দেয়ার জন্য টস করতাম।
মাঝে মাঝে এ নিয়ে হালকা মারামারি ও হয়ে যেত।
আমার মাঝে ও কি এমন দেখেছিল ভাবলে অবাক হই।
কিশোরীর চোখ কত ভুল জিনিস ই না দেখতে পারে।
তবে হ্যাঁ, একটা গুন আমার ছিল,
এলাকার সব বড় ভাই আমাকে খুব পছন্দ করত।
প্রেম পত্র লেখা, সেগুলো কোড করা, জায়গা মত পৌঁছে দেয়া
এগুলো তো আর এমনি এমনি হয় না।
নতুন নতুন বুদ্ধি চাই যে।
আমার চেয়ে ভালো আর কে পারত?
রুবেল ভাই তো বলত বড় হয়ে আমি বিরাট কম্যুনিকেশন স্পেশালিস্ট হব।
ভাই আত্মহত্যা করেছে।
ভাবির সাথে মানসিক যোগাযোগের অপূর্ণতায়।
আর আমি?
সবচেয়ে একান্ত কথাটি রেখে দিয়েছি আমার কাছে
পৌঁছাতে পারিনি যেখানে তা থাকত অনেক যত্নে।
সময় পাইনি।
নিজেকে বোঝাই আমি।
বুঝলাম ই তো শম্পার বাবা বদলি হয়ে শ্যামপুর চলে যাওয়ার পর।
আমার বোনের সাথে গল্প করতে আসা,
আমার দিকে তাকিয়ে থাকা,
অকারণে খোঁচা দেয়া,
আমি খেলতে গিয়ে ব্যথা পেলে ওর চোখ ছলছল করা,
বাতাসের মত মূল্যহীন মনে হত।
আমি তাকিয়ে ছিলাম ফুলের মত নিপুণের দিকে।
বাতাসটা বন্ধ হলে উপলব্ধি হল,
ফুল ছাড়া বাঁচা গেলেও বাতাস ছাড়া যায় না।
ভেবেছিলাম সামারে শ্যামপুর যাবো।
এইতো আর ক’টা দিন মাত্র।
কিছু ক’টা দিন মিলে অনেকগুলো দিন গেল।
কিছু অনেকগুলো দিন মিলে অনেএএএকগুলো দিন।
সাত রকম অনিশ্চয়তা, সতের রকম ভয় আমাকে আটকে রাখল।
আর ছোট ছোট সময়ের পলি আমার উপলব্ধিকে ঢেকে দিল।