আমরা কারখানার বড় বড় যন্ত্র গুলোর কথা বলি,
সেই যন্ত্রগুলোর, যেগুলো আমাদের রক্তে চলে,
আমরা শস্যক্ষেতে ফলানো ফসল গুলোর কথা বলি,
যেগুলো কাটতে হয় মরিচা ধরা কাস্তে দিয়ে,
আমরা গার্মেন্টসের সেলাই মেশিনগুলোর কথা বলি,
যেগুলো দিয়ে কাপড় বুনার বদলে মৃত্যু বুনতে হয়,
আমরা বাজারের সারের বস্তাগুলোর কথা বলি,
যেগুলোর প্রতিটি বস্তায় ভরা থাকে ঘাম মেশানো টাকা,
আমরা রেললাইনের লোহার পাত গুলোর কথা বলি,
যেগুলো বিছানো হয়েছে আমাদের শরীর জোড়া দিয়ে,
আমরা কথা বলি নদী বন্দরের ক্ষয়ে যাওয়া জেটির, আমরা কথা বলি কয়লাখনির কয়লা টানা ট্রলির, আমার কথা বলি জাহাজের তলার ইন্জিনরুমের, আমরা কথা বলি তেইশ কেজি চায়ের পাতা আর শুকনো ভাতের,
আমরা কথা বলি সারা জগতের সবচেয়ে সরল ও কষ্টদায়ক ভাষায়,
আমরা কথা বলি সবকিছুর, যা আমাদের রক্ত-ঘাম-শ্রম-প্রাণ দিয়ে বানানো যায়, কেনা যায়, বিক্রি করা যায়।
কিন্তু আমরা বলতে পারি না আমাদের পরিবারের কথা,
বলতে পারি না হাড়ভাঙা খাটুনি শেষে একশো সত্তুর টাকার কথা,
বলতে পারি না ন্যায্য মজুরির কথা, বলতে পারি না নিজ জীবনের অধিকারের কথা।

কথা বলতে গেলেই তারা আমাদের চুপ করিয়ে দেয়।

তারা কবে আমাদের কথা শুনবে?