যতদূর যায় আমার এই দুটি চোখ– আমি শুধু দেখি
স্তরে স্তরে সাজানো মেঘ; অনন্ত নীল মুক্ত আকাশ,
অদৃশ্য ডানায় চড়ে যে মেঘ দূরে সরে যায়; আমি ডাকি
তারে ক্রমাগত, বাতাসে ভাসে রোদ্রের ঘন নিঃশ্বাস।
নিত্য আকাশের বুকে ডানা মেলে উড়ে শালিক, শঙ্খচিল,
দোয়েল, ময়না, শ্যামা; আরো উড়ে যায় নিঃসঙ্গ কোকিল।
আমি দেখি শুধু; সারা দিন-রাত; নির্জনে তাদের গান শুনি,
তাদের পাখনার তাজা ঘ্রাণ নাকে আসে, আঁধার শেষে
ভোরের স্নিগ্ধতা দেখি; যখন একটুখানি— একটুখানি
করে ঘাসের 'পরে ঝরে নীল কুয়াশা; হৃদয়ে আনন্দ আসে
তখন; হেমন্তের হলুদ ফসল শুয়ে থাকে নীরব মাঠে,
ধানসিঁড়ির তীরে নিশ্চুপ পদ্মপাতা বাতাসে দুলে উঠে।
আমি দেখি এইসব; আমার এই বাংলার স্যাঁতস্যাঁতে মাটি
আমি ছুঁয়ে দেখি; ঘন নিঃশ্বাস নেই চোখ-মুখ, প্রাণ ভরে,
হাতের মুঠোয় শিউলির গন্ধ মাখি, স্নিগ্ধ শীতল পাটি
বিছিয়ে বসে রই হিজলের ছায়ার নিচে, কোমল স্বরে
ডেকে যায় চঞ্চলে ছোট্ট পাখিটি; আমি শুনি কেবল,
আমি বিমুগ্ধ হয়ে রই– দেখে এই বাংলার রুপ সজল।