সে গোধূলি সন্ধ্যা লগ্নে-
তোমাকে ডেকেছিল দূরায়নী ডাক-দূরশ্রবণে
ঘন্টা তিনেক পরে তুমি বার্তা পাঠালেঃ
"প্রার্থনায় রত হও পাবে"
প্রার্থনায় রত হলামঃ কবুল হলো।
পর দিন গত হলো পর দিন সন্ধ্যায়
       এভাবেে পর দিন
            তার পর দিন
             তারও পর দিন
                        আজ
                         কাল
                           পরশু
-তুমি কোন ফোন পেলেনা
তুমি ধরেই নিয়েছঃ
হাঁটু গেড়ে প্রার্থনায় বসে আছি,
আর ফোন "আসবেই"।
না, সে আসেনিকো
        একদিন
           দুইদিন
              তিনদিন
কেটে গেল।
না, কোন ফোন তুমি পেলেনা
তারপর একদিন-বেখেয়ালে
ছয় ছয় অন্ত্যের  ঐ নম্বরে
তোমার শাদা হাত,
  হীরকের হাত,
     পাথরের হাত,
        প্রার্থনার হাত,
            শিহরণের হাত
হঠাৎ পড়লঃ  
প্রতিটি লোমকূপের হাসি,
                ছলনার হাসি,
                   মজা খেলার হাসি,
       প্রতিটি শিরার হাসি
                 ব্যঙ্গের হাসি,
                   বিদ্রূপের হাসি,
       প্রতিটি কলার হাসি,
ষোল কলা, কোষকলা, ছলাকলা।
জানো তুমি ব্যগ্র স্বরভঙ্গি
তোমার কথায়-কিশোর স্বরভঙ্গির
জবাব তুমি পাবেই।
কিন্তু, না, তুমি পেলেনা।
ধরেই নিয়েছ-"ও মরেছে। মরুক গে - আসলে মরার মত হয়ে পড়ে আছে"
অতটা নিষ্ঠুর নও তুমি, যে, সত্যি সত্যি লাশ হয়ে গেছে-ভাববেঃ
শাদা শাদা শব!
শাদা শাদা শব!
মৃত্যুর শব, অন্ত্যের শব
জীবনের শব, পরানের শব
সব আজ শব!
কেটে গেলো আরও ক'টা দিন
তুমি ব্যগ্র নও; অবশ্য ব্যগ্রও হতে পার ঐ ও গুলোর
কাব্য কথাগুলোর লিপি, প্রতিলিপি, ফরোয়ার্ড, এসএমএস
-এত্তোসব নিয়ে।
অনেক অনেক হাজার হাজার শত সহস্র হাজার বছর পরে-
কোন এক গোধূলি সন্ধ্যা লগ্নে-
তোমার চোখে পড়লঃ একটা ডাক-কল
যা ভ্রান্ত-মিসড হয়ে গেছে
"আজব, এত্তোদিন পর আবার ঐ মাতাল টা!
অনিচ্ছায়, বেখেয়ালে, অযুক্তি, অচেতনতায়
অত্যধিক নিরুৎসাহে তুমি ডাকলে-
ধরেই নিয়েছো, ভাঙ্গা- ভাঙ্গা, ভাঙ্গা কলের গান
আবার বেসুরো বাজবে।
কিন্তু, না। আরো অধিক নিরুৎসাহে-এ যে
এক নারী কণ্ঠ, "আপা, আপনি কি নীলাঞ্জণা?"
"হ্যাঁ, ঠিকই আছে।"
একদম আনুনাসিক হ্যাঁ-তবে বক্রে।
আর কোন শব্দ শোনা গেল না।
"হ্যালো, কে বলছেন,কথা বলছেন না যে?"
তুমি শুনলে ভাঙ্গা চূড়ির ঝনঝন শব্দ,
তুমি শুনলে কান্না মোছার শব্দ
দীর্ঘশ্বাস সঠিক হওয়ার শব্দ
"আমি অমুকের(ডাকনাম) ওয়াইফ্"
"ওহ! কে?"
তুমি তো চিনছ না, কারন- তুমি জান শুধু নিবন্ধিত
নাম-কেতাবি ও পেশাগত।
হঠাৎ করে স্মৃতির আঙ্গিনায়, মনে পড়ে গেল
"হ্যাঁ, তাই তো-একদিন পাগলের মতো হয়ে বলেছিল :
আমার নাম ও নীল-ডাক নাম-সকলেই ডাকে-মা, বাবা, অগ্রজ,অনুজ।
তুমি বুঝে নিলে- এটি ও মেকী,বানানো অজুহাত
মিল করার ছল।
অদ্ভূত হেসেছিলে-পুরনো সে বাঁধ ভাঙ্গা হাসি-ব্যঙ্গের হাসি,বিদ্রূপের হাসি, হাসি আর হাসি।
আমি দিয়েছি দোহাই দিব্যি, পরলোকগত পিতামহ আর পিতামহীর।
"আপা, একটু কি সময় হবে এদিকে আসার"
"কেন?"
''এলেই বলবো"
তুমি এলে।
তোমার হাতে গুজে দেয়া হলো দুটো কবিতা।
তুমি পাথর হয়ে গেলে
পাথরও কাদেঁ-পাথরেরও কান্না হয়
নোনা জল,অশ্রু বারিধারা
তোমার চোখে :
শাদা শাদা শব!
শাদা শাদা শব!
শাদা শাদা টিসু
সব যেন
শাদা শাদা শব!!