সেই দিনের কথা বলছি-
যেদিন শহর জুড়ে মিছিল হল
আনন্দ হল,
সেকি মিছিল উত্তাল আনন্দ!

লোকে লোকে লোকারণ্য
মনে নেই-
সেই যে কি যেন নাম?
বিশেষণে ভরা এক মহান নেতা
তার সংবর্ধনা সভার আেেয়াজন।
আত্মগোপন থেকে জনসম্মুখে আসা উপলক্ষে!

সেদিন বক্তার পর বক্তারা
চিৎকারে চিৎকারে
গগণ বিদীর্ণ করে
বিধাতার কান পর্যন্ত পৌছে দিল-
তার উন্নয়নের গরীব মারার চিত্র
ডিজিটালের টালমাতাল রুপরেখা।

সেদিন শহরে গাড়ি চলাচল বন্ধ ছিল
সেদিনও পেটের দায়ে
বৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধা রিকশাচালক আলী মিয়া
রিকশা চালাতে না পেরে একবেলা খেতে পারেনি
পারেনি বৃদ্ধার জন্য দুটো ব্যথার ট্যাবলেট কিনতে।
তার কথা স্বাধীনতার পক্ষের কর্তারা
একবারও ভেবে দেখেনি,
যেন তাদের পদধুলিতে ধন্য শহর
এমনভাবে তারা গগণ বিদীর্ণ করছিল।

লজ্জায় ঘৃণায় আমি সেদিন
আহত হয়ে ফিরে এসেছিলাম
এছাড়া কি করবার ছিল আমার?

আবার সেই যে আরেকদিন
গোলটেবিল না লম্বাটেবিল
সভা না সেমিনার হল-
স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির ব্যানার গায়ে সেটে
সুশীল লোগো গলায় ঝুলিয়ে
যেখানে ডক্টরেট তর্করত্নদের
অনেকেই আলোচনার সারমর্মসহ
যুক্তি দেখালো অকাট্য যুক্তি।

টিপাইমুখ হলে টিপাইমুখের উচ্চতার চেয়েও
বাংলাদেশের উন্নতির পারদ কত বেশি হবে?
ট্রানজিট করিডোরের বিনিময়ে বাংলাদেশ
কতখানি গম চাল ডাল পাবে কমদামে
বাণিজ্যের তরী কতটা টাইটানিক হবে!
অতিরিক্ত গ্যাস কয়লা ওপারে দিলে
বাংলাদেশের অর্থনীতি কত দ্রুত দৌড়াবে,
নদীর পানি হবে টইটম্বুর!
বিডিআর পুর্নগঠনে কত দরকার
বিএসএফ এর পরামর্শ মন্ত্র!

শুনে আমি আশ্চর্য্য হয়ে গেলাম!
চোখের সামনে ভেসে উঠল
সিলেট রাজশাহীর মৃত নদীর ধু ধু বুক-
সীমান্তের বিএসএফ বর্বরতা
কাটা তারের বেষ্টনী বন্ধুত্ব,
ফারাক্কা বাধের বেসম্ভব উন্নয়ন রেখা,
ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিশ্রী মুখোশ-
স্থলবন্দরগুলোতে ভারতীয় গাড়ি চালকদের কল্যাণে
সীমান্তে এইডসের মরণ সম্ভাবনা!
আরও অন্যান্য উপহারের বাড়াবাড়ি।

দেখে শুনে নির্লিপ্ত হয়ে গেলাম
এছাড়া কি করবার ছিল আমার?
আমি যে কিছুই করার ক্ষমতা রাখিনা,
আমি শত্তিহীন দুর্বল এক কবিমাত্র!

ঢাকা,১৫.১০.২০০৯।