(২০১১, জুলাই। লক্ষীপুরের আওয়ামী গডফাদার সন্ত্রাসী তাহেরের পূত্র তিন খুনের মামলার যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামি বিপ্লবকে আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতি (তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মরহুম জিল্লুর রহমান) দলীয় আনুগত্য দেখিয়ে সাধারণ ক্ষমা করেছেন। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবং ৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ ভারতকে সম্মাননা দানের আওয়ামী সিদ্ধান্তের যুক্তিযুক্ত প্রত্যাখ্যান ও দ্বিমত পোষণ পূর্বক।)
মাননীয় সরকার বাহাদুর!
আপনারা বাহাদুরই বটে।
ক্ষমতার দম্ভে আপনাদের আর্শীবাদপুষ্ট পুলিশ আর ছাত্রলীগ দেশে যে বাহাদুরি কায়েম করেছে-
তা আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন।
আপনাদের রাষ্ট্রপতি! যদিও মহামান্য রাষ্ট্রপতিরা দেশের রাষ্ট্রপতিহয়ে উঠতে পারেন না।
সম্প্রতি ক্ষমা করে দিয়েছেন আওয়ামী আর্শীবাদধন্য সন্ত্রাসী পূত্র বিপ্লবকে
অথচ সরকার বাহাদুর্
আপনাদেরই কিছু বাহাদুর সিপাহি একে অনিয়ম বলেছেন।
যদিও এই দেশে সরকার বাহাদুরের ইচ্ছায় কোন অনিয়ম থাকেনা।
তিন খুনের সাজাপ্রাপ্ত বিপ্লব যাকে খুন করে
লাশ টুকরো টুকরো করে নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছিল-
জানিনা নদীর বুকে কান পেতে এখনও
সেই নূরুল ইসলামের আর্তনাদ শোনা যায় কিনা?
তবে তার স্ত্রী-সন্তানদের আর্তনাদ
জনতার বুকে ঠিকই এসে পৌছেছে।
নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা প্রাচীর ভেদ করে
সরকারি দালানে সরকার বাহাদুর
আপনাদের কানে সে কান্না না পৌছানোরই কথা।
সরকার বাহাদুর আপনাদের প্রধানমন্ত্রী
তার বাবার হত্যার বিচার করে চলেছেন
অমীমাংসিত বিচারটুকুও চাইছেন
আপনাদের রাষ্ট্রপতি স্ত্রী হত্যাকারীদের বিচার চান জলদি,
তবে নূরুল ইসলামের স্ত্রী-সন্তানেরা কেন বিচার চাইতে পারবে না।
সরকার বাহাদুরের জন্যে এদেশে ভিন্ন আইন?
আপনাদের মহত্ত্ব, মহানুভবতার কোন তুলনা চলেনা সরকার বাহাদুর।
আমরা আমজনতা আশায় আছি-
আপনারা বঙ্গবন্ধু হত্যা ও রাষ্ট্রপতির স্ত্রী হন্তারকদের ক্ষমা করে দিয়ে-
এদেশে মহত্ত্বের অদ্বিতীয় নজির স্থাপন করবেন সহসা।
হয়ত সেদিন বেশি দূরে নয়!
মহামান্য সরকার বাহাদুর-
আপনারা আপনাদের প্রাণের বন্ধু ভারতকে
স্বাধীনতা এনে দেবার স্বীকৃতি, সম্মাননা দিলেন
বঙ্গভবনের রাশ-উৎসব আর আলো আধারির মঞ্চে!
সেদিন নিশ্চয়ই আপনাদের কানে পৌছেনি
সীমান্তে ভারতীয় জানোয়ার বিএসএফের
বেয়নটের আঘাতে মৃত্যু হওয়া যুবকের চিৎকার।
সরকার বাহাদুর, আমাদের-
আপনাদের সরকারের মধুচিন্দ্রমাকালে সীমান্তে
কত মা, বোন সহায়হীন হয়েছেন সে শুমারি কি
আপনারা জানেন?
কত বধূ, সন্তানের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়েছে
সে খবরও কি আপনারা জানেন।
আপনাদের বন্ধু ভারতকে ট্রানজিট দেবার ফলে
বাংলাদেশ ভারতের কদর বাজারে পরিণত হচ্ছে
সে অর্থনীতি কি আপনারা বোঝেন?
সীমান্তের ট্রানজিট কল্যাণে এইডসের বিস্তারের সম্ভাবনা
তা কি আপনারা ভাবেন?
জানি। তা জানেন না, ভাবেন না, মানেন না!
আপনাদের তো কুছ পরোয়া নেই
জনগণের রক্ত শুষে বলশালী হয়ে চলেছেন-
বিপদে বন্ধু ভারত, মার্কিন ইহুদী লবি তো
আপনাদের ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে
গোফে তা দিয়ে চলছে।
আর আপনারা টাটা, কনোকো-ফিলিপস পেয়ে ধন্য ধন্য করছেন।
সরকার বাহাদুর
আপনাদের বাহাদুরি আছে বটে-
তবে নিজের পিতা, স্ত্রীর খুনিদের ক্ষমা করার-
বাহাদুরিও আমরা দেখতে চাই।
ইন্দিরা দেবীকে সম্মাননা দেবার শুভবুদ্ধি আছে-
তবে সম্মাননা পত্রের সাথে সীমান্তে নিহত ফেলানীদের রক্তমাখা পোশাক
পানি রাজনীতির মরুময়তার সচিত্র
বাণিজ্য ঘাটতির বিশদ বর্ণনা আর-
বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের রুপরেখার বজ্রকন্ঠ প্রতিবাদ-
ভারতকে উপহার দেবার দুঃসাহসও আমরা দেখতে চাই।
আমরা জানি সরকার বাহাদুর
আপনাদের বাহাদুরির সীমানা নেই-
আমরা অপেক্ষায় রইলাম, আপনাদের এই
বাহাদুরিটুকু দেখবার আশায়...
ইতি, আপনাদের ক্রয়কৃত বাংলাদেশী প্রজাবৃন্দ!
ঢাকা, ০১ আগস্ট, ২০১১ইং।