উদাস হয়ে যখন আমি নদীর তীরে যাই,
মাছরাঙা আর গাঙশালিকে বলে আমায়-- "ভাই--
কোথায় তোমার বাড়ি বলো, কোথায় তোমার ঘর?
কোথায় সেসব দীঘলমাঠ, কোথায় নদীর চর?
কোথায় গেল পানকৌড়ি আর সারি সারি বক,
সব হারিয়ে গড়েছ আজ শহুরে ঝকঝক!"
আমরা নিজেই করছি ক্ষতি, বুঝছি আমি বেশ--
খাচ্ছি গিলে চমকধমক, এই খাওয়াই কি শেষ?
শ্যামল মাঠে দালান তুলে, হারাই চিরসবুজ--
পাই না খুঁজে তরুলতা, সবাই যেন অবুঝ!
নদী বলে, "ও ভাই বলো, ভেবে ধীরে ধীরে--
আমার বুকের টলমলে জল, পাব কী আর ফিরে?
বুকটা ছিল বিশাল আমার, করতো খেলা জল--
দু'পাড়ে ঘর বেঁধেছ আর আমার গায়ে মল!
পলিথিনের বর্জ্য মোড়াই, আমার দেহে সারা--
শ্বাস ফেলাতে পারছি না আর, তোমরা নজরহারা!
কেমন করে হাসব আমি, হাসাই জলের মাছ,
অবুঝ পেয়ে আমার উপর, কেন দস্যি নাচ?"
দীর্ঘশ্বাসে মাথা নিচু, আপন মনেই গাই--
নদী-পাখির এমন কথার উত্তর কোথায় পাই?
আমিও এক নিঃস্ব পথিক অতি সাধারণ--
আমার কথা এই দেশে আর শুনবে কতজন?
খুঁজি আজও বনবাদারে, খুঁজি জলাধার--
অবুঝ মনের ব্যাকুল ব্যথায় শুধুই হাহাকার!
রচনাকালঃ
২৪ আশ্বিন ১৪২৫