চার প্রকারে সম্পর্ক বাঁধে আমার ধারনা,
মুখ-দেহ-মন আর সুউচ্চে আত্মার তাড়না;
মুখের সম্পর্কে মানবজাতি কথাবলি দেয়,
কথার বন্যার জলে সম্পর্ক ভাসিয়ে নেয় ।
যেখানে সেখানে বসে জোর গলে বলে,
এই করেছি, সেই করেছি সব গেল জলে;
সারা পৃথিবীর বুকে মুখ ফাটিয়ে বলে যায়,-
আপন করেছি ওকে মোর কানায় কানায় ।
কেন তবু তার মনে স্থান পাওয়া দায় ?
বলেছি বলে কি ভালবাসা ক্ষীণ তায় ?
যাই বলে ভাল যদি বাস নিমিষের তরে,
বলে যাও তবে খুব অত্যুক্তি না করে ।
দেহের সম্পর্ক ওঠে গড়ে কামাভাব মোচনে,
কামুক মনুষ্যের দিগ্বিদিক জ্ঞান শুন্য ক্ষণে;
হারায় অনেক কিছু পায় শুধু সল্প কিছু-
সর্বাধিক প্রসন্নতায় তবু সবে নেয় পিছু ।
দেহের জ্বালা হরনে আজ মরিয়া সকলে,
বহু সম্পর্ক নাশে দেহের পরকীয়া ছলে ;
তবুও থেমে নেই চলছে আর চলবে ও কষে-
মন্দ জ্ঞান করেও গুনীজন রাতে ভুলে বসে ।
দৈহিক সম্পর্ক বাঁধনের তরে প্রতি দিবা নিশি,
কুকর্ম-অপকর্ম চলিতেছে যে আজ অহর্নিশি;
মুখ-মন আর আত্মাকে করে প্রবল সবল-
হেন সম্পর্কের বন্ধনে আসে পূর্ণমনোবল ।
মনের সম্পর্ক সেতো সোজা কথা নয়,
অনেক তপস্যা বলে তবে সিদ্ধ হয়;
বহুকাল আর বহুদিনের নিঃস্বার্থ ভালবাসা,
মনের সম্পর্কের তীরে এসে বাঁধে বাসা ।
হেন সম্পর্ক গড়ে ওঠে ভাঙ্গে কভু নয়,
সামান্য ঝড়েতে এর নাহি হয় ক্ষয়;
হৃদয়ে- হৃদয়ে এই মেল্বন্ধন পেতে-
বহুকাল পার হয়ে যায় পরিনত হতে।
কখন ও বিচ্ছেদ আবার পুনঃ পুনঃ মিলে,
এমনি সম্পর্কের ভিত্তি গড়ে ধরণীর তলে;
ছেড়ে যেতে পারে দূরে কিংবা বহুদুরে-
অন্তরে স্থান থাকে আজীবন তরে ।
আত্মার সম্পর্ক গড়া সবার কাজ নয় ,
মনের সম্পর্ক তীব্র হলে আত্মা পানে ধায়;
এহেন সম্পর্ক ধরায় সাক্ষী রেখে যায়,
মৃত্যুর পরবর্তী বহু কালেও লোকে মনে লয় ।
অবিনশ্বর এ সম্পর্কের অন্ত নাহি হয়,
সর্বাধিক প্রচেষ্টাতে ও নেই কোন ক্ষয় ;
হেন সম্পর্কে নেই কোন বিচ্ছেদের ভয়,
সর্ব জয়ী – কাল জয়ী এর নেইকো পরাজয় ।
সহস্র কোটি বছর বাদেও আসে ফিরে,
পার্থিব এই ধরিত্রীর সর্ব মানবের ভিড়ে;
সবার উপরে এ সম্পর্ক ধরে মহাশক্তি বল,
এ সম্পর্কে লাগে জন্মাজন্ম তপস্যার ফল ।।